সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় আত্মহত্যা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

By daily satkhira

January 21, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭ সালে দেশে মোট আত্মহননকারীর সংখ্যা ছিল ১০ হাজারের কিছু বেশি। ২০১৮ তে তা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজারে। জাপানে এক সময় আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেশি থাকলেও এখন তা কমে এসেছে। অথচ আমাদের দেশে নানা সামাজিক কারণে এই প্রবণতা বেড়েই চলেছে। সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আত্মহত্যার প্রবণতা রোধে করণীয় বিষয়ক এক কর্মশালায় এই তথ্য প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের পিএইচডি গবেষক দেশের খ্যাতিমান কাউন্সিলিং সাইকোলজিস্ট মো. সেলিম চৌধুরী। বাংলাদেশ পুলিশ এবং ইউনিসেফের জরিপে এই তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন এ অবস্থা থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করতে হবে। আর এজন্য নিতে হবে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ। তিনি বলেন কেনো এতো আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে তা খতিয়ে দেখতে উদ্যোগী হতে হবে। প্রয়াত অনীক আজিজ স্বাক্ষরের প্রথম মৃত্যুবার্ষিক উপলক্ষ্যে অনীকদের জন্য উদ্যোগ আয়োজিত কর্মশালায় সংগঠনের সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান মাসুমে উপস্থাপনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান। তিনি বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় ২০১৮ সালে ২৭৪ টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০১৭ সালে এই সংখ্যা ছিল ৩০৬ জন। ‘অনীকদের জন্য উদ্যোগ’ শীর্ষক কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক বিশিষ্ট সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্যে সন্তানহারা পিতা এবং অনীকদের উদ্যোগ এর প্রতিষ্ঠাতা সাতক্ষীরা -১(তালা কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, আমরা আর কাউকে অনীক, প্রান্ত, অর্ণবদের মত পরিণতি বরণ করতে দিতে পারি না। আমাদের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য থাকবে আর কেউ যেন আত্মহননের পথ বেছে না নেয় তা নিশ্চিত করা। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) অনিন্দিতা রায়। বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ। কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ছাড়াও জনপ্রতিনিধিরা অংশ গ্রহন করেন। কর্মশালায় বলা হয় কেনো এতো আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। অভিভাবকের আচরণ, শিক্ষা ব্যবস্থা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, লিঙ্গ বৈষম্য, সামাজিক অবক্ষয় নাকি অন্য কিছু তা তলিয়ে দেখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলা হয় এর থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজতে হবে। আমাদের শিশুরা নানা কারণে বিষন্নতা ও আশাহীনতায় ভোগে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় শিশু কিশোররা মাদকের দিকে ঝুঁকছে কিনা তা দেখতে হবে। এ প্রসঙ্গে তারা আরও বলেন শিশুর মেধা বিকাশের স্বাভাবিক সুযোগ দিতে হবে। চাপ প্রয়োগ করে তার কাছ থেকে বেশি কিছু প্রত্যাশা করা ঠিক নয়। এ ধরনের সাতটি প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে পাঠ্যপুস্তকে আত্মহত্যা বিষয়ক প্রবন্ধ লেখা, কাউন্সেলিং, গনমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশসহ নানা বিষয়।