স্বাস্থ্য ও জীবন: শীতে শতকরা ৪২ ভাগ মানুষের হাঁটু ও অন্যান্য জয়েন্টের ব্যথা বেড়ে যায়। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে ঠাণ্ডা, আর্দ্র আবহাওয়ায় জয়েন্ট ব্যথা বৃদ্ধি পায়। শীতে বায়োমেট্রিক চাপ কমে যায়। ফলে আমাদের শরীরের কোষ বা টিস্যুগুলো আমাদের স্নায়ুর ওপর চাপ দেয়। এজন্য জয়েন্টে ব্যথা হয়। এছাড়াও যাদের হাঁটুতে আথ্রাইটিস আছে তাদের হাঁটু ব্যথার মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়।
ইংরেজিতে কবি জর্জ হারর্বাট বলেছেন, শীতে প্রত্যেক মাইল দ্বিগুণ হয়ে যায়। এসময় আমাদের জয়েন্ট মুভমেন্ট কমে যায়। অনেকেই দীর্ঘ সময় এক পাশে শুয়ে থাকেন ফলে জয়েন্ট ব্যথা হয়। এছাড়াও শীতে আমাদের ভাইটাল ওরগান হার্টকে গরম রাখার জন্য আমাদের শরীর কাজ করে। ফলে পেরিফিরাল বা প্রান্তীয় জয়েন্টগুলো অতি মাত্রায় ঠাণ্ডা হয়ে যায় এবং ব্যথা হয়। ব্যথা সারাতে কী করবেন
নিয়মিত শরীরচর্চা করুন (প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট)। শরীরচর্চা আপনার রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা হাঁটু ব্যথা কমায়। নিয়মিত এক্সারসাইজ হাঁড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে জয়েন্ট রিলেটেড বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করে। পাশাপাশি ডিপ্রেশন কমিয়ে মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। ব্যথা সারাতে ফিজিওথেরাপি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন যুগান্তকারী চিকিৎসা। বলা হয়ে থাকে, ফিজিওথেরাপি ইজ মেডিসিন ফর টুডে অ্যান্ড টুমোরো, এক্সারসাইজ ইজ মেডিসিন ফর টুডে অ্যান্ড টুমোরো।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ব্যথা নিরাময়ে কিছু প্রাকৃতিক ঔষধের কথা বলেছেন। যেমন- মধু (ব্যথার স্থানে মধুর সাথে ভিনেগার মিশিয়ে মাখালে ব্যথা কমে),খেজুর, কালো জিরা, ওলিভ অয়েল,তরমুজ ইত্যাদি খাবার ব্যথা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত খান ,প্রচুর পানি খান। প্রতিদিন ৩০ মিনিট গাঁয়ে রোদ লাগান। ধুমপান বর্জন করুন।
খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন -সামুদ্রিক মাছ , টুনা মাছ, বাদাম, ফ্লাকসসিড যোগ করুন। এগুলো শীতকালীন ব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
শীতে নিয়মিত শরীরচর্চা করুন, সুস্থ থাকুন, হাঁটু ব্যথা মুক্ত থাকুন। যারা হাঁটুর অসুস্থতায় বা ব্যথায় ভুগছেন তারা নিকটস্থ মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিসর্ডার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন।