সাতক্ষীরা

কাস্টমস মুকুলের কাণ্ড : সুলতানপুর বড়বাজারে চলাচলের পথের উপর পাঁকা দোকান নির্মাণ

By Daily Satkhira

February 08, 2017

শেখ শরিফুল ইসলাম/মাহাফিজুল ইসলাম আককাজ: সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড় বাজারের চান্নির চলাচলের পথ নিশ্চিহ্ন করে তার উপর সংস্কারের নামে নির্মাণ করা হচ্ছে পাঁকা দোকান ঘর। আর এই দোকান ঘর নির্মাণের কাজ নিশ্চিত করতে ১২ জন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে সকলকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব পালন করছেন শহরের কুখ্যাত চায়না রসুন, সুপারি ও গোলমরিচ চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের হোতা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান মুকুল। উল্লেখ্য, কাস্টমস মুকুল ওরফে চিনি মুকুল নামে পরিচিত এই মুকুল এক সময়ে জেলার শীর্ষ চিনি চোরাকারবারী হিসেবে পরিচিত ছিল। চায়না থেকে আমদানিকৃত রসুন সাতক্ষীরা থেকে ভারতে পাচারচক্রের হোতা এই মুকুল দীর্ঘদিন ধরে সুলতানপুর বড়বাজারের মুদি ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছেন। যদিও তিনি বলেন, এ ধরনের চোরাচালান সংক্রান্ত কোন ঘটনা তার জানা নেই। উল্লেখ্য, গত পৌর নির্বাচনের সময় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রত্যেক সারির টল দোকানগুলোর সামনে দিয়ে চলাচলের জন্য যে পথ রাখা ছিল, তার একটি অংশ সম্পূর্ণ দখল করে সংস্কারের নামে সেখানে পাকা দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। যদিও কয়েকদিন আগে স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো: মহিউদ্দীন বিষয়টি দেখার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অরুণ কুমার মন্ডলকে নির্দেশ দেন। কিন্তু এরপরও নির্মাণ কাজ চলছে যাতায়াতের পথের উপরেই। বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল বিষয়টিকে একটি পরিকল্পিত দুর্নীতি হিসেবইে দেখছেন। তারা মনে করছেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়েই কেবল এই দখল কাজ দিন-দুপুরে সম্পন্ন হচ্ছে। বাজারের একাধিক মুদি ব্যবসায়ী পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, ছোট ছোট টলের দোকানদের নিকট থেকে মাথাপিছু মোটা অংকের টাকা নিয়ে সুলতানপুর বড় বাজার মুদি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান মুকুল নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দুই সারি দোকানের মাঝের চলাচলের পথের উপরেই পাঁকা ঘর নির্মাণ করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আব্দুর রউফ, উত্তমসহ কয়েকজন বলেন, সুলতানপুর বড় বাজার মুদি ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মুকুল ভাই এই দোকান ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। অন্যদিকে, রতন সাহা নামে এক মুদি ব্যবসায়ী বলেন, আমি টাকা দিতে পারিনি বলে আমার দোকানটি হয়নি। একই লাইনে দোকান হওয়া সত্ত্বেও কয়েকটি দোকান এখনও টলের দোকান আছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, “আমি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অরুণ কুমার মন্ডলকে বিষয়টি দেখার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি।” তিনি আরো বলেন, “ওখানে দোকান ঘর সংস্কার করার অনুমতি দেয়া হয়েছে কিন্তু ছাদ না দিয়ে টিনের চাল হবে।” যাতায়াতের পথ বন্ধ করে কীভাবে দোকান সম্প্রসারণ করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যদি যাতায়াতের পথ বন্ধ করে ঘর হয় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অরুণ কুমার মণ্ডল বলেন, “এক সনা লিজের ক্ষেত্রে অনুমতি সাপেক্ষে পাকা দেয়াল নির্মাণ করা যেতে পারে। তবে ছাদ দেয়া যাবে না।” মাঝখানের যাতায়াতের পথের উপর দোকানঘর নির্মাণের বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, “দুই পাশে যাতায়াতের পথ রেখেই দোকানঘর নির্মাণ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।” অন্যদিকে বাজারের মুদি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান মুকুল বলেন, “আমরা সংস্কারের অনুমতি নিয়েই দোকানঘর পাকা করছি।” যাতায়াতের নির্ধারিত পথের উপর স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।