আন্তর্জাতিক

ইতিহাস ভেঙে রাজনীতিতে থাইলান্ডের রাজকুমারী

By Daily Satkhira

February 09, 2019

বিদেশের খবর: থাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবলরত্না রাজাকনইয়া সিরিভাধনা বার্নাভাদি দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দেশটির ইতিহাসে এই প্রথম রাজপরিবারের কোনো সদস্য দেশটির রাজনীতিতে অংশ নিচ্ছেন। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার দল থাই রকসা চার্ট থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে লড়াই করবেন। খবর আলজাজিরার।

থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের বড় বোন উবলরত্না শুক্রবার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করেছেন।

সেনাবাহিনী ২০১৪ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ওই সময় ক্ষমতা দখল করে সেনা সরকারের প্রধানমন্ত্রী প্রাউথ চান-ওচা বলেছিলেন, সামরিক বাহিনী দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছাড়বে। তার বেঁধে দেওয়া সেই সময় পার হয়েছে বেশ আগেই। এরপর চারবার পরিবর্তন হয়েছে নির্বাচনের তারিখ। সর্বশেষ নির্বাচনের নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ মার্চ।

১৯৭২ সালে এক মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করে রাজকুমারীর পদবী হারান উবলরত্না। ১৯৯০ সালে বিচ্ছেদের পর দেশে ফিরে আসেন তিনি। তবে তিনি আর রাজকীয় উপাধি ফিরে পাননি। তবে থাইল্যান্ডের জনগণ তাকে রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে সম্মান করে থাকে।

উবলরত্না ইনস্টাগ্রামে বলেছেন, তিনি তার নাগরিক অধিকারের চর্চা করছেন এবং থাই রকসা চার্টের মনোয়ন গ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার রাজপরিবারের পদবি পরিহার করেছি এবং সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করছি। কোনো ধরনের বাড়তি সুবিধা না নিয়ে থাই সংবিধান অনুযায়ী, অন্যান্য নাগরিকদের মতো অধিকার ও স্বাধীনতা প্রকাশের জন্য থাই রকসা চার্টের পক্ষে মনোয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।’

সিনাওয়াত্রা পরিবারের দীর্ঘ দিনের বন্ধু উবলরত্না। ২৪ মার্চের নির্বাচনে সিনাওয়াত্রা দলের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন তিনি। সিনাওয়াত্রা পরিবারের কেউ এবার সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না।

ব্যাংকক থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক ওয়েনি হে জানান, থাই রাজনীতিতে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা নতুন মাত্রা পেল।

‘থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে এমন ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। রাজপরিবারকে সবসময় রাজনীতির ঊর্ধ্বে বিবেচনা করা হয়। যদিও সবাই জানে, থাইল্যান্ডের রাজপরিবার সবচেয়ে ক্ষমতাবান।’

থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন রাজকুমারীর মনোয়ন গ্রহণ করেছেন কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

থাই সেনা সমর্থিত রাজনৈতিক দল দ্য পিপলস রিফর্ম পার্টি নির্বাচন কমিশনকে রাজকুমারীর মনোনয়নের বিষয়টি বিবেচনার জন্য বলেছে। তারা মনে করছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজপরিবারের আইন লঙ্ঘন করেছেন তিনি। আগামী শুক্রবারের মধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে।

থাইল্যান্ড সামরিক সরকারের প্রধান প্রাউথ চান-ওচা এক বিবৃতিতে বলেছেন, সেনা সমর্থিত পালং প্রাচারাত পার্টি থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে লড়বেন।

২০১৪ সালের মে মাসে থাকসিন সিনাওয়াত্রার বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে প্রধানমন্ত্রী হন প্রাউথ। রাজকুমারী উবলরত্নাকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

১৯৩২ সাল থেকে থাইল্যান্ডে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র চালু হয়। দেশটির লাখ লাখ জনগণের মধ্যে রাজপরিবারের প্রতি ব্যাপক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে।