ভিন্ন স্বাদের খবর: বেনারসি নয়। বিয়েতে কনে সাজবে ‘আনারসি’ শাড়িতে! অবাক করার বিষয়, তাই না? কারণ কাঞ্জিভরম, সিল্ক, তাঁত, সুতির শাড়ি পরতেই অভ্যস্ত বাঙালি নারীরা। তাই বলে আনারসি শাড়ি! তা-ও আবার বিয়ের সাজের জন্য! রসালো ফল থেকে শাড়ি?
বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হলেও আনারসের পাতা থেকে তৈরি সুতা দিয়ে শাড়ি বুনে তাক লাগিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগরের নারীরা। এমনকি, সেই সুতা থেকে তৈরি হচ্ছে সাজগোজের গয়নাও! শুক্রবার ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমে এমনই তথ্য জানানো হয়েছে।
শিলিগুড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে আনারস গাছ থেকে উৎপাদিত সুতা দিয়ে তৈরি শাড়ির বিষয়ে জানিয়েছেন বিধাননগর পাইনাপল ফাইবার প্রসেসিং রেহ ইন্ডাস্ট্রিয়াল কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের নারী সদস্যরা। সোসাইটির সদস্যরা প্রত্যেকেই আনারস চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আনারস গাছ কাটার পর তারা সেই গাছের পাতা থেকে সুতা বের করেন ও সেই সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি করেন। আনারসের থেকে উৎপাদিত সুতা দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্য বানানো হয়েছে একটি উত্তরীয়।
উত্তরবঙ্গ আনারস চাষি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অরুণ মণ্ডল বলেন, ‘কয়েক বছরের প্রচেষ্টার পর আনারসের সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এর আগে দু’বার সুতা দিয়ে শাড়ি বা বস্ত্র তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সফল হতে পারিনি। ফের ২০১৮ সাল থেকে আমরা নতুন করে কাজ শুরু করি এবং সফল হই।’
সোসাইটির সম্পাদক পম্পা পাল মণ্ডল বলেন, ‘আনারস চাষিদের পরিবারের নারীরাই সোসাইটির সদস্য। আনারস চাষিদের পাশে দাঁড়িয়ে আর্থিক সহযোগিতা করাই এই সোসাইটির লক্ষ্য। আগামীতে সোসাইটির থেকে একটি কারখানা বানিয়ে একত্রিতভাবে ও আরও বেশি সংখ্যায় শাড়ি উৎপাদনের চেষ্টা করব।’
সংবাদমাধ্যমটিতে প্রকাশিত তথ্য মতে, ২০১০ সালে মালয়েশিয়ায় একটি আনারসের মেলাতে গিয়ে প্রথম আনারস গাছ থেকে সুতা তৈরির বিষয়টি দেখতে পান আনারস চাষি অরুণ মণ্ডল। তিনিই বিধাননগরে এসে একইভাবে সুতা তৈরির কাজ শুরু করেন। এর আগে আশির দশকে ড. যতীন বিশ্বাস ও তারপর ক্যালিপ্সো বেঙ্গল ফুডস নামে একটি সংস্থা আনারস থেকে সুতা তৈরির উদ্যোগ নিলেও সফল হননি।