ফিচার

স্বামী বিএনপি নেতা হওয়ায় আ. লীগের মনোনয়ন হারালেন লিপি

By Daily Satkhira

February 12, 2019

রাজনীতির খবর: স্বামী বিএনপি নেতা হওয়ায় সমালোচনার মুখে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন শিরিনা নাহার লিপি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শুক্রবার গণভবনে দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সংরক্ষিত নারী আসনে যে ৪১ জনকে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত হয়, তাদের মধ্যে ছিলেন যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি লিপি।

তার মনোনয়নের খবর প্রকাশের পরপরই সমালোচনা করে ফেইসবুকে পোস্ট দেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। স্বামী বিএনপি নেতা হওয়ার পরও তাকে কেন মনোনয়ন দেওয়া হল, সে প্রশ্ন তোলেন তারা।

আশির দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসা লিপি কেন্দ্রীয় কমিটিরও সদস্য ছিলেন। তার বাবা প্রয়াত এম এ বারী সত্তরের দশকের প্রথম দিকে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন হিসেবে পরিচিত বারী খুলনা থেকে সংসদ সদস্যও হয়েছিলেন।

তবে তার স্বামী আইনজীবী গাজী কামরুল ইসলাম সজল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, যা নিয়ে আপত্তি করেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীরা।

লিপির মনোনয়ন বাতিল চেয়ে ফেইসবুক পোস্টে তার স্বামীর বিএনপি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ হিসেবে পোস্টারও তুলে ধরেন অনেকে।

তারই একটি পোস্টারে দেখা যায় সজল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি।আইনজীবী হিসেবে তিনি যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার পক্ষে লড়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন যুব লীগের উপ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নাসরিন সুলতানা জারা।

এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “যুদ্ধাপরাধী এবং নেত্রীর হত্যাচেষ্টাকারীকে যে রক্ষা করে, সেটা কোনো মতাদর্শ না।যুদ্ধাপরাধী ও তার রক্ষাকারীদের সাথে যারা সহবাস করে তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে- এটা আমি মানব না। নেত্রীর হত্যাচেষ্টাকারীকে যে বাঁচাতে আদালতে লড়াই করে তার সাথে কোনো আওয়ামী লীগ নেতার কন্যা সংসার করতে পারে না।

“যাকে নিয়ে কথা হচ্ছে, তার পিতা বেঁচে থাকলে এর প্রতিবাদ নিশ্চয়ই করতেন।আসলে আমাদের হৃদয়ে লাগে…কারণ পুলিশের মার খেয়েছি, গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছি, এক এগারোতে নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনে রাজপথে মিছিল করে পুলিশের মার খেয়েছি। তখন খালেদা জিয়ার পুত্রবধূরা খালেদার জন্য রান্না করে পাঠাত। আমরা সব জানি, আর তাই কষ্ট পাই…আমরা নেত্রীকে ভালোবাসি, আমরা সুযোগসন্ধানী না।কসাই কাদের এর উকিল, লাল পাসপোর্ট পাবে এটা মানতে কষ্ট হয়…।” এ ধরনের সমালোচনার মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়নের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে শিরিনা নাহার লিপিকে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সোমবার নির্বাচন কমিশনে যে ৪৩ জনের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তার মধ্যে তিনি নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ বলেন, “শিরিনা নাহার লিপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা অভিযোগ করেছেন। তাছাড়া লিপির স্বামী বিএনপির নেতা সেটা প্রমাণিত হয়েছে।

“সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে লিপির মনোনয়ন বাতিল করে টাঙ্গাইলের মমতা হেনা লাভলীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।”