বিদেশের খবর: অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি হয়ে গেছে ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা। ফলে বাতিল হয়ে গেছে বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব বিল এবং তিন তালাক বিল।
কয়েকমাস পরেই ভারতের লোকসভা নির্বাচন। নবনির্বাচিত সরকারকে নতুন করে এই দু’টি বিল তৈরি করতে হবে ওই নির্বাচনের পর।
নাগরিকত্ব বিল বাতিল হয়ে যাওয়ার ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতের বাসিন্দারা এখন স্বস্তি পাবেন। পাশাপাশি সেখানে চলমান বিক্ষোভ-প্রতিবাদও প্রশমিত হবে।
বুধবারই ছিল বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার চেষ্টা করছিল, যেভাবেই হোক নাগরিকত্ব বিল এবং তিন তালাক বিল দু’টি পাশ করিয়ে নেয়ার।
কিন্তু তার আগেই রাফাল (যুদ্ধবিমান) চুক্তি নিয়ে রিপোর্ট পেশ হয়। সেই রিপোর্ট পেশ হতেই হট্টগোল শুরু করে বিরোধীরা। এই হট্টগোলের মধ্যেই অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পীকার বেঙ্কাইয়া নায়ড়ু।
রাজ্যসভার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, নিম্নকক্ষে পাশ হয়ে যাওয়া বিল যদি লোকসভার মেয়াদ ফুরোনোর আগে উচ্চকক্ষে পাশ না হয়, তাহলে সেই বিল পুরোপুরি বাতিল হয়ে যায়। নির্বাচনে নবগঠিত সরকারকে আবার নতুন করে বিলের ব্যাপারে ভাবতে হবে।
এই দুই বিলের এখন আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই। এর ফলে বিজেপি সরকার আসন্ন নির্বাচনে বেশ কিছুটা ধাক্কা খাবে।
উল্লেখ্য, দু’টি বিলই বিতর্কিত। কিন্তু নাগরিকত্ব বিল নিয়ে বিতর্কের মাত্রা অনেকটাই বেশি। এই বিলের প্রতিবাদে উত্তর-পূর্ব ভারত কার্যত ক্ষোভে ফুটছে।
বিলের প্রতিবাদেই ভুপেন হাজারিকাকে দেয়া ভারতরত্ন নিতে অস্বীকার করেছেন তার ছেলে তেজ হাজারিকা।
অন্যদিকে নাগরিকত্ব বিলের ব্যাপারে এখনো কিছু বলা না হলেও, ক্ষমতায় এলে তিন তালাক বিল বাতিল করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে কংগ্রেস।
গত ৮ জানুয়ারি ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে পাস হওয়া নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৬ মারাত্মক জটিলতার সৃষ্টি করে। সাম্প্রদায়িক প্রকৃতির এই বিলের আশ্রয়প্রার্থী তালিকা থেকে মুসলিমদেরকে বাদ রাখা হয় এবং তা কেবল পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ।
বিলটিতে বলা হয়েছে, এই তিন দেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান, পার্সি ও জৈন অভিবাসীরা মাত্র ছয় বছর ভারতে বাস করলে তাদের কোনো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকলেও নাগরিকত্ব পেতে পারবে। এই ব্যবস্থাটি ভারতের উত্তর-পূর্ব এলাকার গ্রুপগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।