দেশের খবর: সৌদি আরবের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) দেশটির সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর জার্মানি ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন শেষবার সৌদি আরব সফর করেছিলেন তখনই মাইন সুইপিং, সিভিল কন্সট্রাকশনের মতো বিষয়ে একটি প্রস্তাব ছিল এবং প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি বিবেচনা করবেন।’পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে তাতে বিবেচনায় থাকবে তিনটি বিষয়: অ্যাডভাইজরি, মাইন সুইপিং এবং সিভিল কন্সট্রাকশন। বিদেশে সেনাবাহিনীকে নিয়োজিত করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী পূর্বঘোষিত নীতিতেই অটল আছেন; ব্লু হেলমেট (জাতিসংঘ বাহিনী) ছাড়া বাংলাদেশ তার সৈন্য যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাবে না। তবে মক্কা ও মদিনায় হামলা হলে ব্লু হেলমেট ছাড়াও বাংলাদেশ সৈন্য পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে পারে।গত ৩ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছিল, সৌদি আরব-ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় মাইন অপসারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি প্রস্তুত করা হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুইটি ব্যাটেলিয়নের প্রায় এক হাজার ৮০০ সেনা সদস্য মাইন অপসারণের কাজে নিয়োজিত হবে, যা সৌদি আরব ও বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ বলেছিলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সৌদি আরবের বিভিন্ন সামরিক, বেসামরিক অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সৌদি আরবের বিভিন্ন সামরিক খাতে নিয়োজিত করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলসহ চারজন কর্মকর্তার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে সৌদি আরবের ইসলামিক মিলিটারি কাউন্টার টেরোরিজম কোয়ালিশনের (আইএমসিটিসি) কাছে।
উল্লেখ্য, গত দুই বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারবার সৌদি আরব সফর করেছেন এবং গত অক্টোবরে তার সফরের সময়ে এই চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া, গত এপ্রিলে তিনি সৌদি আরবের দাম্মামে অনুষ্ঠিত একটি সামরিক মহড়ার সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকীও ছাড়া রিয়াদ সফর করেছেন সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রধানগণ। সৌদি আরবের নেতৃত্বে গঠিত ইসলামিক মিলিটারি কাউন্টার টেরোরিজম কোয়ালিশনে যোগ দেওয়া বাংলাদেশ গত বছর গাল্ফ শিল্ড-১ নামের সামরিক মহড়ায়ও অংশগ্রহণ করেছে।