ফিচার

ভালোবাসা দিবসে বাংলা ভাষার বিখ্যাত একডজন প্রেমের কবিতা

By Daily Satkhira

February 14, 2019

সাহিত্য ডেস্ক: ভালোবাসার ঠিকানা জানেন? খোঁজ পাবেন কবিতায়। ভালোবাসা বা প্রেমের সঙ্গে কবিতার গভীর মিতালী। প্রেম-ভালোবাসা মানে মানব-মানবীর মন বিনিময়, আর কবিতা হলো মনেরই খোড়াক। প্রেমের কোনো না কোনো পর্যায়ে কবিতা হয়ে ওঠে প্রেমিক-প্রেমিকার একান্ত আশ্রয়। ভালোবাসার এই মাতাল দিনে বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কবিদের বহুলপঠিত এক ডজন কবিতায় চোখ রাখা যাক

চিল্কায় সকাল

বুদ্ধদেব বসু

কী ভালো আমার লাগলো আজ এই সকালবেলায় কেমন করে বলি?

কী নির্মল নীল এই আকাশ, কী অসহ্য সুন্দর,

যেন গুণীর কণ্ঠের অবাধ উন্মুক্ত তান দিগন্ত থেকে দিগন্তে;

কী ভালো আমার লাগলো এই আকাশের দিকে তাকিয়ে;

চারদিক সবুজ পাহাড়ে আঁকাবাঁকা, কুয়াশায় ধোঁয়াটে, মাঝখানে চিল্কা উঠছে ঝিলকিয়ে।

তুমি কাছে এলে, একটু বসলে, তারপর গেলে ওদিকে,

স্টেশনে গাড়ি এসে দাড়িয়েঁছে, তা-ই দেখতে।

গাড়ি চ’লে গেল!- কী ভালো তোমাকে বাসি, কেমন করে বলি?

আকাশে সূর্যের বন্যা, তাকানো যায়না।

গোরুগুলো একমনে ঘাস ছিঁড়ছে, কী শান্ত! -তুমি কি কখনো ভেবেছিলে এই হ্রদের ধারে এসে আমরা পাবো

যা এতদিন পাইনি?

রূপোলি জল শুয়ে-শুয়ে স্বপ্ন দেখছে; সমস্ত আকাশ

নীলের স্রোতে ঝরে পড়ছে তার বুকের উপর

সূর্যের চুম্বনে।-এখানে জ্ব’লে উঠবে অপরূপ ইন্দ্রধণু

তোমার আর আমার রক্তের সমুদ্রকে ঘিরে কখনো কি ভেবেছিলে?

কাল চিল্কায় নৌকোয় যেতে-যেতে আমরা দেখেছিলাম

দুটো প্রজাপতি কতদূর থেকে উড়ে আসছে

জলের উপর দিয়ে।- কী দুঃসাহস! তুমি হেসেছিলে আর আমার কী ভালো লেগেছিল।

তোমার সেই উজ্জ্বল অপরূপ মুখ। দ্যাখো, দ্যাখো,

কেমন নীল এই আকাশ-আর তোমার চোখে

কাঁপছে কত আকাশ, কত মৃত্যু, কত নতুন জন্ম কেমন করে বলি?

প্রেমের কবিতা

শামসুর রাহমান

যখন তোমার সঙ্গে আমার হলো দেখা

লেকের ধারে সঙ্গোপনে,

বিশ্বে তখন মন্দা ভীষণ, রাজায় রাজায়

চলছে লড়াই উলুর বনে।

যখন তোমার পায়রা-হাতে হাতটা রেখে

ডুবে থাকি স্বর্গসুখে,

তখন কোনো গোলটেবিলে দাবার ছকে

শ্বেত পায়রাটা মরছে ধুঁকে।

আমরা যখন ঘড়ির দুটো কাঁটার মতো

মিলি রাতের গভীর যামে,

তখন জানি ইতিহাসের ঘুরছে কাঁটা, পড়ছে বোমা ভিয়েতনামে।

কথোপকথন-১১

পূর্ণেন্দু পত্রী

– তুমি আজকাল বড্ড সিগারেট খাচ্ছ শুভন্কর।

– এখুনি ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছিৃ

কিন্তু তার বদলে??

–বড্ড হ্যাংলা। যেন খাওনি কখনো?

– খেয়েছি।

কিন্তু আমার খিদের কাছে সে সব নস্যি।

কলকাতাকে এক খাবলায় চিবিয়ে খেতে পারি আমি,

আকাশটাকে ওমলেটের মতো চিরে চিরে,

নক্ষত্রগুলোকে চিনেবাদামের মতো টুকটাক করে, পাহাড়গুলোকে পাঁপর ভাজার মতো মড়মড়িয়ে,

আর গঙ্গা? সে তো এক গ্লাস সরবত।

–থাক। খুব বীরপুরুষ। –সত্যি তাইৃ

পৃথিবীর কাছে আমি এই রকমই ভয়ন্কর বিস্ফোরণ।

কেবল তোমার কাছে এলেই দুধের বালক,

কেবল তোমার কাছে এলেই ফুটপাতের নুলো ভিখারি, এক পয়সা, আধ পয়সা কিংবা এক টুকরো পাউরুটির বেশী আর কিছু চিনিয়ে নিতে পারিনা।

–মিথ্যুক..।

–কেন?

–সেদিন আমার সর্বাঙ্গের শাড়ি ধরে টান মারনি?

– হতে পারে। ভিখারিদের কি ডাকাত হতে ইচ্ছে করবে না একদিনও?

মন ভালো নেই

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

মন ভালো নেই মন ভালো নেই মন ভালো নেই

কেউ তা বোঝে না সকলি গোপন মুখে ছায়া নেই

চোখ খোলা তবু চোখ বুজে আছি কেউ তা দেখেনি

প্রতিদিন কাটে দিন কেটে যায় আশায় আশায়

আশায় আশায় আশায় আশায়

এখন আমার ওষ্ঠে লাগে না কোনো প্রিয় স্বাদ

এমনকি নারী এমনকি নারী এমনকি নারী

এমনকি সুরা এমনকি ভাষা

মন ভালো নেই মন ভালো নেই মন ভালো নেই

বিকেল বেলায় একলা একলা পথে ঘুরে ঘুরে

একলা একলা পথে ঘুরে ঘুরে পথে ঘুরে ঘুরে

কিছুই খুঁজি না কোথাও যাই না কারুকে চাইনি

কিছুই খুঁজি না কোথাও যাই না

আমিও মানুষ আমার কী আছে অথবা কী ছিল

আমার কী আছে অথবা কী ছিল

ফুলের ভিতরে বীজের ভিতরে ঘুণের ভিতরে

যেমন আগুন আগুন আগুন আগুন আগুন

মন ভালো নেই মন ভালো নেই মন ভালো নেই

তবু দিন কাটে দিন কেটে যায় আশায় আশায় আশায় আশায় আশায় আশায়

নিঃসঙ্গতা

আবুল হাসান

অতোটুকু চায় নি বালিকা!

অতো শোভা, অতো স্বাধীনতা! চেয়েছিলো আরো কিছু কম,

আয়নার দাঁড়ে দেহ মেলে দিয়ে

বসে থাকা সবটা দুপুর, চেয়েছিলো মা বকুক, বাবা তার বেদনা দেখুক!

অতোটুকু চায় নি বালিকা!

অতো হৈ রৈ লোক, অতো ভিড়, অতো সমাগম! চেয়েছিলো আরো কিছু কম!

একটি জলের খনি তাকে দিক তৃষ্ণা এখনি, চেয়েছিলো

একটি পুরুষ তাকে বলুক রমণী

তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা

শহীদ কাদরী

ভয় নেই

আমি এমন ব্যবস্থা করবো যাতে সেনাবাহিনী

গোলাপের গুচ্ছ কাঁধে নিয়ে

মার্চপাস্ট করে চলে যাবে

এবং স্যালুট করবে কেবল তোমাকে প্রিয়তমা।

ভয় নেই, আমি এমন ব্যবস্থা করবো

বন-বাদাড় ডিঙ্গিয়ে

কাঁটা-তার, ব্যারিকেড পার হয়ে, অনেক রণাঙ্গনের স্মৃতি নিয়ে

আর্মার্ড-কারগুলো এসে দাঁড়াবে

ভায়োলিন বোঝাই করে কেবল তোমার দোরগোড়ায় প্রিয়তমা।

ভয় নেই, আমি এমন ব্যবস্থা করবো-

বি-৫২ আর মিগ-২১গুলো

মাথার ওপর গোঁ-গোঁ করবে

ভয় নেই, আমি এমন ব্যবস্থা করবো

চকোলেট, টফি আর লজেন্সগুলো

প্যারাট্রুপারদের মতো ঝরে পড়বে কেবল তোমার উঠোনে প্রিয়তমা।

ভয় নেই…আমি এমন ব্যবস্থা করবো

একজন কবি কমান্ড করবেন বঙ্গোপসাগরের সবগুলো রণতরী

এবং আসন্ন নির্বাচনে সমরমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সবগুলো গণভোট পাবেন একজন প্রেমিক, প্রিয়তমা!

সংঘর্ষের সব সম্ভাবনা, ঠিক জেনো, শেষ হবে যাবে-

আমি এমন ব্যবস্থা করবো, একজন গায়ক

অনায়াসে বিরোধীদলের অধিনায়ক হয়ে যাবেন

সীমান্তের ট্রেঞ্চগুলোয় পাহারা দেবে সারাটা বৎসর

লাল নীল সোনালি মাছি- ভালোবাসার চোরাচালান ছাড়া সবকিছু নিষিদ্ধ হয়ে যাবে, প্রিয়তমা।

ভয় নেই আমি এমন ব্যবস্থা করবো মুদ্রাস্ফীতি কমে গিয়ে বেড়ে যাবে

শিল্পোত্তীর্ণ কবিতার সংখ্যা প্রতিদিন

আমি এমন ব্যবস্থা করবো গণরোষের বদলে

গণচুম্বনের ভয়ে হন্তারকের হাত থেকে পড়ে যাবে ছুরি, প্রিয়তমা।

ভয় নেই,

আমি এমন ব্যবস্থা করবো

শীতের পার্কের ওপর বসন্তের সংগোপন আক্রমণের মতো

অ্যাকর্ডিয়ান বাজাতে-বাজাতে বিপ্লবীরা দাঁড়াবে শহরে,

ভয় নেই, আমি এমন ব্যবস্থা করবো

স্টেটব্যাংকে গিয়ে

গোলাপ কিম্বা চন্দ্রমল্লিকা ভাঙালে অন্তত চার লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে একটি বেলফুল দিলে চারটি কার্ডিগান।

ভয় নেই, ভয় নেই

ভয় নেই,

আমি এমন ব্যবস্থা করবো

নৌ, বিমান আর পদাতিক বাহিনী

কেবল তোমাকেই চতুর্দিক থেকে ঘিরে-ঘিরে নিশিদিন অভিবাদন করবে, প্রিয়তমা।

মিলনটুকুই খাঁটি

রফিক আজাদ

মিছেই তুমি করছ বিবাদ

দিচ্ছ কঠিন আড়ি,

তোমার কথার তুবড়ি তো শেষ

চলো এবার বাড়ি;

তোমার ক্রোধ তোমার দ্রোহ

মলিন হবে রাতে,

আমার পিঠেই নাচবে দু’হাত

আনন্দে-আহ্লাদে;

কিসের বিরোধ কিসের দ্রোহ

শয্যা পরিপাটি,

পুরুষ-নারীর মিলনই সব মিলনটুকুই খাঁটি।

যাত্রাভঙ্গ

নির্মলেন্দু গুণ

হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে

মন বাড়িয়ে ছুঁই,

দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই।

হেমের মাঝে শুই না যবে,

প্রেমের মাঝে শুই

তুই কেমন কর যাবি?

পা বাড়ালেই পায়ের ছায়া আমাকেই তুই পাবি।

তবুও তুই বলিস যদি যাই, দেখবি তোর সমুখে পথ নাই।

তখন আমি একটু ছোঁব

হাত বাড়িয়ে জড়াব তোর

বিদায় দুটি পায়ে,

তুই উঠবি আমার নায়ে, আমার বৈতরণী নায়ে।

নায়ের মাঝে বসবো বটে,

না-এর মাঝে শোবো,

হাত দিয়েতো ছোঁব না মুখ দুঃখ দিয়ে ছোঁব।

প্রস্থান

হেলাল হাফিজ

এখন তুমি কোথায় আছো কেমন আছো, পত্র দিও।

এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালীর তাল পাখাটা খুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে, পত্র দিও।

ক্যালেন্ডারের কোন পাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিত ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে তোমার দিকে, পত্র দিও।

কোন কথাটা অষ্টপ্রহর কেবল বাজে মনের কানে

কোন স্মৃতিটা উস্কানি দেয় ভাসতে বলে প্রেমের বানে পত্র দিও, পত্র দিও।

আর না হলে যত্ন করে ভুলেই যেও, আপত্তি নেই। গিয়ে থাকলে আমার গেছে, কার কী তাতে?

আমি না হয় ভালবাসেই ভুল করেছি ভুল করেছি,

নষ্ট ফুলের পরাগ মেখে

পাঁচ দুপুরে নির্জনতা খুন করেছি, কি আসে যায়?

এক জীবনে কতোটা আর নষ্ট হবে, এক মানবী কতোটা বা কষ্ট দেবে!

চিঠি দিও

মহাদেব সাহা

করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও

আঙ্গুলের মিহিন সেলাই

ভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,

এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও, তোমার শাড়ির মতো অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।

চুলের মতন কোনো চিহ্ন দিও বিস্ময় বোঝাতে যদি চাও …

বর্ণনা আলস্য লাগে তোমার চোখের মতো চিহ্ন কিছু দিও!

আজো তো অমল আমি চিঠি চাই, পথ চেয়ে আছি,

আসবেন অচেনা রাজার লোক

তার হাতে চিঠি দিও, বাড়ি পৌঁছে দেবে …. এমন ব্যস্ততা যদি শুদ্ধ করে একটি শব্দই শুধু লিখো, তোমার কুশল! …

করুণা করে হলেও চিঠি দিও, ভুলে গিয়ে ভুল করে একখানি চিঠি

দিও খামে

কিছুই লেখার নেই তবু লিখো একটি পাখির শিস

একটি ফুলের ছোট নাম,

টুকিটাকি হয়তো হারিয়ে গেছে কিছু, হয়তো পাওনি খুঁজে

সেইসব চুপচাপ কোন দুপুরবেলার গল্প

খুব মেঘ করে এলে কখনো কখনো বড় একা লাগে, তাই লিখো করুণা করে হলেও চিঠি দিও, মিথ্যা করে হলেও বোলো, ভালবাসি!

অভিমানের খেয়া

রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

পরাজিত প্রেম তনুর তিমিরে হেনেছে আঘাত পারিজাতহীন কঠিন পাথরে।

প্রাপ্য পাইনি করাল দুপুরে,

নির্মম ক্লেদে মাথা রেখে রাত কেটেছে প্রহর বেলা

এই খেলা আর কতোকাল আর কতোটা জীবন!

কিছুটাতো চাই- হোক ভুল, হোক মিথ্যে প্রবোধ,

আভিলাষী মন চন্দ্রে না-পাক জোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই, কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।

আরো কিছুদিন, আরো কিছুদিন- আর কতোদিন?

ভাষাহীন তরু বিশ্বাসী ছায়া কতোটা বিলাবে?

কতো আর এই রক্ত-তিলকে তপ্ত প্রনাম! জীবনের কাছে জন্ম কি তবে প্রতারনাময়?

এতো ক্ষয়, এতো ভুল জ’মে ওঠে বুকের বুননে,

এই আঁখি জানে, পাখিরাও জানে কতোটা ক্ষরন কতোটা দ্বিধায় সন্ত্রাসে ফুল ফোটে না শাখায়।

তুমি জানো না- আমি তো জানি,

কতোটা গ্লানিতে এতো কথা নিয়ে এতো গান, এতো হাসি নিয়ে বুকে নিশ্চুপ হয়ে থাকি

বেদনার পায়ে চুমু খেয়ে বলি এইতো জীবন,

এইতো মাধুরী, এইতো অধর ছুঁয়েছে সুখের সুতনু সুনীল রাত!

তুমি জানো নাই- আমি তো জানি।

মাটি খুঁড়ে কারা শস্য তুলেছে,

মাংশের ঘরে আগুন পুষেছে,

যারা কোনোদিন আকাশ চায়নি নীলিমা চেয়েছে শুধু, করতলে তারা ধ’রে আছে আজ বিশ্বাসী হাতিয়ার।

পরাজয় এসে কন্ঠ ছুঁয়েছে লেলিহান শিখা,

চিতার চাবুক মর্মে হেনেছো মোহন ঘাতক।

তবুতো পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে মুখর হৃদয়, পুষ্পের প্রতি প্রসারিত এই তীব্র শোভন বাহু।

বৈশাখি মেঘ ঢেকেছে আকাশ,

পালকের পাখি নীড়ে ফিরে যায়

ভাষাহীন এই নির্বাক চোখ আর কতোদিন?

নীল অভিমান পুড়ে একা আর কতোটা জীবন? কতোটা জীবন!!

হাত

তসলিমা নাসরিন

আবার আমি তোমার হাতে রাখবো বলে হাত

গুছিয়ে নিয়ে জীবনখানি উজান ডিঙি বেয়ে

এসেছি সেই উঠোনটিতে গভীর করে রাত

দেখছ না কি চাঁদের নীচে দাঁড়িয়ে কাঁদি দুঃখবতী মেয়ে !

আঙুলগুলো কাঁপছে দেখ, হাত বাড়াবে কখন ?

কুয়াশা ভিজে শরীরখানা পাথর হয়ে গেলে ?

হাত ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম বর্ষা ছিল তখন,

তখন তুমি ছিঁড়ে খেতে আস্ত কোনও নারী নাগাল পেলে।

শীতের ভারে ন্যুব্জ বাহু স্পর্শ করে দেখি

ভালবাসার মন মরেছে, শরীর জবুথবু,

যেদিকে যাই, সেদিকে এত ভীষণ লাগে মেকি।

এখনও তুমি তেমন আছ। বয়স গেল, বছর গেল, তবু।

নিজের কাঁধে নিজের হাত নিজেই রেখে বলি : এসেছিলাম পাশের বাড়ি, এবার তবে চলি।