ফিল্ডারদের নরম হাত ফসকে রানের পাহাড় করা ভারতকে এবার সহজে উইকেট বিলিয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ভারতের করা ৬ উইকেট হারিয়ে ৬৮৭ রানের পর দ্বিতীয় দিনের শেষে এক উইকেট হারিয়ে ৪১ রান করেছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের শুরুতে তামিম ইকবালকে হারিয়েছে সফরকারীরা। ইনিংসের ১৬তম ওভারে রান নেওয়ার সময় ভুল বোঝাবুঝি হয়ে রানআউট হন তামিম। বাউন্ডারি লাইন থেকে ভেসে উমেশ যাদবের আসা বলটা হাতে নিয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন ভুবনেশ্বর কুমার। ৫৩ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ২৫ করেন তামিম। এরপর মুমিনুল হককে ফিরিয়ে দেন উমেশ যাদব। ভারতীয় এই পেসারের বল আঘাত হানে মমিনুলের বাম প্যাডে। কোহলিদের আবেদনে আঙুল তুলতে সময় নেননি আম্পায়ার।
এরপর ১০ ওভারেই ৪৫ রান তুলে নেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ জুটি। ইশান্ত শর্মার বলে লেগবিফোর হয়ে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৫৭ বলে ২৮ রান করেন বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের স্তম্ভ খ্যাত এই ব্যাটসম্যান।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চার উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান করেছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান ২৯ ও মুশফিকুর রহিম ৬ রানে অপরাজিত আছেন। কোহলিদের প্রথম ইনিংসের চেয়ে এখনো ৫৬২ রানে পিছিয়ে আছে মুশফিক বাহিনী।
গতকাল প্রথম ইনিংসে শুরুটা বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই করেন বাংলাদেশি ওপেনাররা। ভারতীয় পেসারদের ভালোভাবেই সামলাচ্ছিলেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তবে ১২তম ওভারে উমেশ যাদবের বলে উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহাকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন সৌম্য সরকার। দিনের শেষ কয়েকটা ওভার দেখেশুনেই পার করেছেন তামিম ও মুমিনুল। ১৫ রান করেন সৌম্য সরকার।
এর আগে ৬ উইকেটে ৬৮৭ রান করে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ভারত।
বিরাট কোহলির ডাবল সেঞ্চুরি ও মুরালি বিজয়ের সেঞ্চুরির পর শতক করেছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহা। ব্যাটিং প্রদর্শনীর ম্যাচে কোহলি ২০৪, মুরালি বিজয় ১০৮, ঋদ্ধিমান ১০৬, চেতেশ্বর পুজারা ৮৩ ও আজিঙ্কা রাহানে ৮২ রান করেন।
এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ভারত রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে ৬৮৭ রানের স্কোর গড়ে ইনিংস ঘোষণা করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ডাবল সেঞ্চুরি (২০৪) আসে অধিনায়ক বিরাট কোহলির ব্যাট থেকে। ক্যারিয়ারের ১৬তম সেঞ্চুরি করেন তিনি। আর এ নিয়ে চারটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকালেন।
কোহলির পর দলীয় ইনিংস ঘোষণার সময় ১০৬ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহা। এটি তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে প্রথম দিন ওপেনার মুরালি বিজয়ও দলের হয়ে সেঞ্চুরি (১০৮) হাকান।
ওপেনার লোকেশ রাহুল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনই ভারতের ইনিংসে অন্তত হাফসেঞ্চুরির দেখা পাননি। এ ছাড়া চেতেশ্বর পুজারা (৮৩), আজিঙ্কা রাহানে (৮২) ও অপরাজিত থাকা রবিন্দ্র জাদেজা (৬০) হাফসেঞ্চুরি করেন।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তিনি কোহলির উইকেটসহ তিনটি উইকেট তুলে নেন। দুটি উইকেট পান মেহেদি হাসান মিরাজ। একটি উইকেট দখল করেন তাসকিন আহমেদ।
বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ সতর্কতার সঙ্গেই খেলতে থাকে। দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য সরকার ভারতীয় বোলারদের বেশ মানিয়েই নেন। তবে দলীয় ১২ ওভারের দ্বিতীয় বলে ছোট ভুলেই মাশুল দিতে হয় সৌম্যকে। উমেশ যাদবের বলে খোঁচা দিলে ব্যাটের একেবারে কিনারায় লেগে উইকেটরক্ষকের ক্যাচে চলে যায়।
আম্পায়ার অবশ্য আউট দেননি। কিন্তু পরে রিভিউ চাইলে তৃতীয় আম্পয়ারের নির্দেশনায় আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন সৌম্য। তিনি ৩১ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ১৫ রান করেছিলেন। অন্যদিকে ৪৮ বলে তিনটি চারে ২৪ রান করে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন তামিম। মুমিনুল ১ রানে মাঠ ছাড়েন।