আসাদুজজামান: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক প্রদীপ কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দূুনির্তীর অভিযোগ উঠেছে। তিনি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে দীর্ঘদিন ধরে থাকার সুবাদে তাকে বড় বাবু নামে সবাই চেনেন। নিয়োগ, বদলী, ডেপুটেশন, পি আর এল ও পেনশন বানিজ্যসহ সকল অবৈধ কাজের মূল হোতা এই বড় বাবু। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করেই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন তার সকল অবৈধ কাজ। উচ্চমান সহকারী হয়েও প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছেন সাতক্ষীরা শহরে বিলাস বহুল বাড়ি। অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রদীপ কুমার মন্ডল ২০০০ সালে উচ্চমান সকহারী কাম হিসাব রক্ষক হিসেবে সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় যোগদান করে চাকরি জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন উপজেলায় চাকুরি শেষে ২০০৮ সালে সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বদলী হয়ে আসেন। এখানে যোগদানের পর থেকে তিনি ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। তার বিরুদ্ধে চাকুরি দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা গ্রহণ, নৈশ প্রহরী নিয়োগ, প্রশ্নপত্র ফাস ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পাইয়ে দেওয়ারসহ বেশ কিছু লিখিত অভিযোগের তদন্ত শেষে সত্যতা পান তদন্ত কমিটি। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তদন্ত কমিটি তাকে অন্যত্র বদলী করার জন্য সুপারিশ করলে প্রায় ১০ বছর পর গত বছরের মার্চ মাসে তাকে শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বদলী করা হয়। বদলীর প্রায় ২ মাস অতিবাহীত হলেও তিনি কর্মস্থলে যোগদান না করায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাকে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নিদের্শ দেন। একই সাথে অনুলিপি দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক বছরে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এর মধ্যে সাতক্ষীরা পৌরসভায় ২নং ওয়ার্ডের রথখোলা বিলের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করেছে বিলাস বহুল ৪ তলা বাড়ি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি জেলা অফিস থেকে বদলীর শেষ মাসে সর্বমোট বেতন তুলেছিলেন ২৯ হাজার ৯’শ ১৬ টাকা। এই বেতনে কিভাবে তিনি ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিলাস বহুল বাড়ি নির্মাণ করলেন সেটিই এখন জেলা বাসীর প্রশ্ন ? শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে জানা যায়, যোগদানের পর থেকে প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও মাত্র কয়েক দিন তিনি অফিস করেছেন। তার অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে উপস্থিত সকলেই বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসাকে ম্যানেজ করেই তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন। কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মির্জা মিজানুর রহমান বলেন, মাঝে মাঝে তিনি অফিসে আসেন। তবে, চলতি সপ্তাহ থেকে অফিস করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে উচ্চমান সহকারী প্রদিপ কুমার বলেন, অফিসের কিছু কাজে সব সময় জেলা অফিসে থাকতে হয়। ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিলাশ বহুল বাড়ি কিভাবে তৈরি করলেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে বিষয়টি হেসেই উড়িয়ে দেন। সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারীর অফিসে অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি কিছু জানেননা বলে জানান।