আন্তর্জাতিক

কাশ্মীরে পুলিশের নির্যাতনই জঙ্গি বানায় আদিলকে

By Daily Satkhira

February 17, 2019

বিদেশের খবর: জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় ৪৬ পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় কাঁদছে পুরো ভারত। নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা বিশ্বে। এই আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছেন আদিল আহমেদ দার, যাকে ভারত বলছে জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-এ মোহাম্মদের সদস্য।

কাশ্মীরের পুলাওয়ামা জেলার কাকাপোরা গ্রামেই তার জন্ম। পড়াশোনাও সেখানকারই স্কুলে। আদিল কিভাবে জইশ-এ মোহাম্মদের সঙ্গে যুক্ত হলেন ফিরিস্তি দিয়েছেন তার মা-বাবা।

পরিবারের কথায়, কাশ্মীরে পুলিশের নির্যাতনই তাকে বাধ্য করেছে এ পথে যেতে। শনিবার এনডিটিভির খবরে বলা হয়, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে একদিন আদিলকে ঘিরে ধরে পুলিশ। প্রচণ্ড মারধর করে। তারপর নাকখত দেয়ায়।

নাকখত দিতে দিতেই তাকে ঘোরানো হয় পুলিশের জিপের চারপাশে, বছর তিনেক আগে। ওই ঘটনাই বলে জানিয়েছেন আদিলকে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল তার মা-বাবা। তাদের বক্তব্য, আদিল ছোটবেলায় এমন ছিল না। স্কুলে যেত, আসত। মোটামুটি শান্ত স্বভাবেরই ছেলে।

কিন্তু, ওই ঘটনাই তাকে রাগিয়ে দিয়েছিল।

পুলওয়ামার ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কাকাপোরায় আদিলের বাড়ি। স্কুল ছিল হাঁটা পথে । বড়জোর দুই কিলোমিটার দূরে। আদিলের বাবা গুলাম হাসান দার বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফেরি করেন হরেকরকমের জিনিস।

আদিলের বাবা বলেন, একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে। ও স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। পথে পুলিশ ওকে ধরে। অনেকক্ষণ আটকে রাখে। প্রচণ্ড মারধর করে। নাকখত দেয়ায়। নাকখত দিতে দিতে ওকে পুলিশের জিপের চারপাশে ঘোরানো হয়। এতে খুব অপমান বোধ করেছিল। মাঝেমধ্যেই ওই ঘটনার কথা বলত আমাদের। পুলিশ ওর সঙ্গে কেন এমন ব্যবহার করল, তা নিয়ে বারবারই প্রশ্ন করত আমাদের।

গুলাম হাসান জানিয়েছেন, তখন থেকেই বদলে যেতে থাকে আদিল। স্বভাবটাও রুক্ষ হয়ে যায়। কেন পুলিশ তাকে ধরে মারধর করেছিল- এমন প্রশ্নে গুলাম হাসান বলেন, ‘স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে আদিল পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়েছিল। কাজটা যে ও খুব বুঝেসুজে করেছিল, তা মনে হয় না। কিন্তু, তার জন্য ওর কপালে যা জুটেছিল, তা ওকে খুব চটিয়ে দিয়েছিল। মাঝেমধ্যেই বলত, স্বাধীনতাকামীদের দলে ভিড়ে যাবে।

আদিলের মা ফাহমিদা বলেন, ওই ঘটনায় ও খুব রেগে গিয়েছিল। সবসময় চাইত বদলা নিতে। আমি সবসময় চাইতাম ও ওসব সঙ্গ ছেড়ে বেরিয়ে আসুক। বোঝাতাম। আমি ওকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু, পারিনি। স্কুলছুট হয়েই আদিল নাম লিখিয়েছিল জইশ-ই মোহাম্মদে। সেখানে তার আরও দুটি নাম ছিল। ‘আদিল আহমেদ গাড়ি তাকরানেওয়ালা’ ও ‘ভাকাস কম্যান্ডো অফ গান্ডিবাগ’। প

রিবারের লোকজন ও গ্রামের পড়শিরা শুক্রবার দেহ ছাড়াই আদিলের দাফন সেরেছে। কাকাপোরার সেই গ্রামে যাতে বাইরের লোকজন যেতে না পারেন, ফের অশান্তির আবহ তৈরি না হয়, সেজন্য কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আঁটোসাটো রাখা হয়েছিল।