শ্যামনগর প্রতিনিধি: শ্যামনগরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। নেই স্বাস্থ্য ও প,প,কর্মকর্তা (টিএইচএ), মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) এর মত গুরুত্বপূর্ণ কেউ। প্রয়োজনীয় ডাক্তার সহ লোকবলের অভাবে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে। বাংলাদেশের সর্ব বৃহত্তর উপজেলা, আইলা বিধ্বস্ত অবহেলিত এ জনপদের সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২০০৮ সালের ১৫ মে ৩০ শয্যা থেকে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। হাসপাতালটি ৩০ শয্যা থাকাকালীন যে সুবিধা ছিল ৫০ শয্যার ক্ষেত্রেও একই সুবিধা। হাসপাতালে প্রতিনিয়ত একশ’ বেশি রোগী ভর্তি থাকে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সুবিধা থাকলেও লোক বলের অভাবে সেগুলি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালের ইসিজি ও এক্সরে মেশিন দু-টি দুই বছর যাবত নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। হাসপাতালে মেডিসিন, সার্জারি, এ্যানেসথেসিয়া, গাইনী, অর্থ, চর্ম ও যৌন, কার্ডিও, শিশু, ইএনটি, টি বি, ১১ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট ও আর এম ও, মেডিকেল অফিসার, ডেন্টাল সার্জন, ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার, ইনডোর মেডিকেল অফিসার, মেডিকেল অফিসার, প্যাথলজিস্ট, ও এ্যানেসথেটিষ্ট (নবসুষ্টি) না থাকায় গরীব রোগীদের বিভিন্ন ক্লিনিক সহ সাতক্ষীরা জেলা শহরে ছুটতে হয়। সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ক্ষতি সহ নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করতে হয় অনেক রোগীকে। পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য সব ধরণের সুবিধা থাকলেও সেগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। লোকবলের অভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে হাসপাতালটি। গতকাল রবিবার সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়।
শ্যামনগর হাসপাতালে ডাক্তারদের পদের সংখ্যা ৩৩ হলেও ডাক্তার আছে মাত্র ৩ জন। অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিভাগে নির্ধারিত কোন ডাক্তার প্রতিনিয়ত পাওয়া যায় না। আর সেবিকা ২৫ জনের স্থলে আছে ২৩ জন। তন্মধ্যে ২ জন আছেন প্রেষণে খুলনা সদর হাসপাতাল। ওয়ার্ড বয় ৩ জনের স্থলে আছেন দুইজন। ল্যাবরেটরি এটেনডেন্ট পদটি বরাবরই প্রেষণে আছে। অপারেশন থিয়েটার বয় প্রেষণে আছে। মালিও পদটি প্রেষণে আছে। সুইপার মাত্র ৫ জন। আয়া ২ জনের স্থলে আছে একজন। শ্যামনগর হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারী সবমিলিয়ে ২৪৬ থাকার কথা থাকলেও পদ খালি আছে ৮২জন এর।
উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ শতাধিক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। হাসপাতালের রোগীদের ভোগান্তির কথা জানান রোগী ও রোগীর স্বজনরা। ডাক্তারের দেখা না পেয়ে রোগীর স্বজনদের ভাষায় বিভিন্ন ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাড়ে ছয় লক্ষ মানুষের বসবাস উপজেলায়। ডাক্তার আছে তিনজন, একজন আবার ইউনানী।
হাসপাতালটি ৩০ শয্যা থাকাকালীন যে সুবিধা ছিল ৫০ শয্যার ক্ষেত্রেও একই সুবিধা। ইসিজি ও এক্সরে মেশিন দুটি দীর্ঘ দিন যাবত নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। হাসপাতালে প্রতিনিয়ত একশ’ বেশি রোগী ভর্তি থাকে। ফলে সুচিকিৎসা থেকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিদিন ৩ জন ডাক্তার দ্বারা ৩ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া দূরহ ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। ৮২ জন শূন্য পদে লোক নিয়োগে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও সরকারিভাবে ৩০ শয্যার ন্যায় ঔষধ সরবরাহ করা হয়। অপ্রতুল ঔষধ সরবরাহ নিয়ে বিশাল জনগোষ্ঠীকে সু-চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।গতকাল বহুদূর থেকে আসা গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা না দিতে পেরে তাদেরকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। (ডিএসএফের) কার্ডধারী গরিব রোগীরা পড়েছে চরম বিপাকে পারছে না তাদের সাধ্যমতো চিকিৎসা করাতে। কারণ হাসপাতালে অজ্ঞান করা ডাক্তার থাকলেও নেই অপারেশন করার মত কোন ডাক্তার। শ্যামনগরের হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা পরিবর্তন নিয়ে নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বেও অনেক রোগী ব্যাপকভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন
শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা টিএইচএ, পদে দীর্ঘদিন কেউ যোগদান করেনি লোকবলের অভাবে সঠিক সেবা দেওয়া কষ্টকর। তারপরও আমরা সীমিত ডাক্তার ও আনুষঙ্গিক জনবল নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সার্বিক বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন বলে অফিস সূত্রে জানান।