নিজস্ব প্রতিবেদক : মৌসুমের প্রথম শিলাবৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় আমের মুকুলসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (২৫ ফেব্র“য়ারি) ভোরে একঘণ্টার বৃষ্টিতে প্রায় পাঁচভাগের বেশী আমের মুকুল ঝরে গেছে। ক্ষতি হয়েছে নাবিজাতের আলু, পিয়াজ, রসুন, গম, ডাল, সরিষা ও ভুট্টাসহ ফসলের। আম চাষিরা জানিয়েছেন, শিলাবৃষ্টির আঘাতে সাতক্ষীরার সদর, তালা, কলারোয়া, আশাশুনি, দেবহাটা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলায় আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে মুকুল ঝরে পড়েছে। গাছে থাকা মুকুলে দাগ হয়ে গেছে। ভোর ৪টা ২০ মিনিট থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়। এরমধ্যে প্রায় ৩০মিনিট ধরে ছিল শিলাবৃষ্টি। এসময় বজ্রপাতও হয়েছে। তবে বৃষ্টির সময় হালকা ঝড়ো হাওয়া ছিল । ভোরের এই সাতক্ষীরায় ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান আবহাওয়া অফিসের উচ্চমান পর্যবেক্ষক জুলফিকার আলী রিপন । সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১৯৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়া উপজেলায় ৬০২ হেক্টর, তালা উপজেলায় ৭০৫ হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ৩৬৮ হেক্টর, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১২৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল। এ বছরও প্রায় সম পরিমাণ জমিতে আমের চাষ হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, সাতক্ষীরা সদরে আমের বাগান ছিল ১৫৩০টি, কলারোয়ায় ১৩১০টি, তালায় ১৪৫০টি, দেবহাটায় ৪৭৫টি, কালিগঞ্জে ১৪২টি, আশাশুনিতে ১৯০টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০টি । এবার বাগানের সংখ্যা আরও বেশি। সদরের ফিংড়ি এলাকার আম চাষি মনিরুল ইসলাম, আবুল হোসেন, তালা উপজেলার নগরঘাটার আলফাজ হোসেন, আশাশুনির বুধহাটার আব্দুল গফ্ফারসহ অনেক আম চাষি জানান, বাগানে আমের মুকুল দেখে খুশিতে মন ভরে গিয়েছিল । মনে অনেক স্বপ্ন জেগেছিল। কিন্তু অসময়ের শিলাবৃষ্টিতে আমের মুকুলের সাথে ঝরে গেছে সেই স্বপ্ন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অরবিন্দু বিশ্বাস জানান, শিলাবৃষ্টি ও হালকা ঝড়ো বাতাসে আমের মুকুলের পাশাপাশি গম, ডাল, সরিষা, নাবিজাতের আলুর ক্ষতি হয়েছে। তবে এ বৃষ্টি বোরো ধানের জন্য আশীর্বাদ। শিলা বৃষ্টির কারণে আমের মুকুল শতকরা ২০ভাগ নষ্ট হয়েছে।