কালিগঞ্জ

ফতেপুরে ৫ম শ্রেণির ছাত্র বাথরুম থেকে ৮ ঘন্টাপর উদ্ধার ॥ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি

By daily satkhira

February 16, 2017

আহম্মাদ উল্যাহ বাচ্ছু : বহুদিন পূর্বে দেশের একটি বিদ্যালয়ের বাথরুমে ছাত্র নিহত হওয়ার বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুটির ঘন্টা নামক একটি বাস্তব চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছিল। এ ঘটনার মধ্যে দিয়ে শিশুদের প্রতি নির্মম আচারণকে মানবিক গুণাবলি সমদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থার অভাবকেই দায়ী করেছিলেন সচেতন মহল। ছুটির ঘন্টার কাহিনীর মত বাস্তব আরো একটি ঘটনা ১৫ই ফেব্রয়ারি সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের বাথরুম থেকে অবশেষে অভিভাবকদের প্রচেষ্টায় ৮ ঘন্টা পর অসুস্থ্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিলয় দাশকে। সরেজমিন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণশ্রীপর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের অরবিন্দু দাশের ছেলে নিলয় দাশ (১১) ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিনের ন্যায় নিলয় বুধবার স্কুলে যেয়ে ছুটির শেষ মুহুর্ত্বে বাথরুমে যায়। নৈশ প্রহরীকাম দপ্তরী আব্দুল হাই ছুটির ঘন্টা বাজিয়ে স্কুলের সকল কক্ষ ও বাথরুমে তালা লাগিয়ে বাড়িতে চলে যায়। এদিকে নিলয় বাথরুমের প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে দরজা খুলতে ব্যার্থ হয়। বেশ কিছুক্ষণ চিৎকার ও চেচামেচি করে অবশেষে সে জ্ঞান হারায়। প্রতিদিনের ন্যায় বিদ্যালয়ের ছুিট শেষে নিলয় বাড়িতে না ফেরায় পিতা-মাতা ও পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী ও দপ্তরীকাম নৈশ প্রহরীর কাছে নিলয়ের বিষয়ে খোঁজ খবর নিলে তারা জানায় বিদ্যালয়ের ছুটির পর সে বাড়ি চলেগেছে। নিলয়ের পিতামাতা ও পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খুঁজে তাকে না পেয়ে হতাশায় ভুগতে থাকে। রাত গভীর হলে খোঁজা খুজির এক পর্যায়ে নিলয়ের দাদু নিমাই দাশ রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় নিলয় বলে ডাকদিলে বাথরুমের ভিতর থেকে শব্দ শুনতে পান তিনি। নিলয়ের সাড়া পেয়ে ততক্ষণে তাদের হৃদয় মন চমকে উঠে। ওইরাতেই নিলয়ের অভিভাবদের প্রচেষ্টায় প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরীকাম প্রহরীকে সংবাদ দিয়ে এনে বিদ্যালয়ের বাথরুমের তালা খুলে অসুস্থ্য অবস্থায় নিলয়কে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের বাথরুমে নিলয়কে আটকে রাখার ঘটনায় প্রধান শিক্ষক ও নৈশ প্রহরীকাম দপ্তরীকে দায়ী করেছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় এলাকার অভিভাবকবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান। ৫ম শ্রেণির ছাত্র নিলয়কে বিদ্যালয়ের বাথরুমে আটকে রাখার ব্যপারে প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা শিকার করেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শেখ ফারুক হোসেন কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ঘটনার বিষয়ে তিনি শুনেছেন অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্লাস্টারের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, শিশুর প্রতি এ ধরনের অমানবিক ঘটনা খুবই দুঃখ জনক। ভূক্তভোগী অভিভাবক নিলয়ের বাবা জানান প্রধান শিক্ষক প্রায়ই সময় ছুটির পূর্বে বাড়িতে চলে যায়। ঘটনার দিনও তিনি একই ভাবে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন। এদিকে এলাকাবাসী বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর উদ্দ্যেগ নিলে প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বনী বিষয়টি ঘামাচাপা দিতে শিক্ষক নেতাদের কাছে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। নিলয়ের বাবা আরো বলেন আমার সন্তানের মত আর কোন স্কুলে যেন এ ঘরনের ঘটনা না ঘটে সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।