দেশের খবর: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র কর্মকারের বড় মেয়ের জামাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজন কর্মকারের রহস্যময় মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ডা. রাজনের। তবে তার স্বজন ও সহকর্মীরা অভিযোগ করছেন, তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়।
রোববার (১৭ মার্চ) রাজধানীর ইন্দিরা রোডের বাসা থেকে স্কয়ার হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে রাজনের স্বজনদের দাবি এটি হত্যাকাণ্ড।
সকালে খাদ্যমন্ত্রীর ছোট মেয়ে রাজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। কিছু সময় পর হাসপাতালে আসে রাজনের স্ত্রী কৃষ্ণা কাবেরী।
এই ঘটনায় রাজনের ময়নাতদন্ত দাবি করে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার করার দাবি জানিয়েছেন তার সহকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, রাজন কর্মকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডেন্টাল বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক। রাজনের স্ত্রী-ও বিএসএমএমইউ’র সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
এর আগে, গত বছর স্ত্রী কৃষ্ণার দ্বারা মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত রাজন মাসখানেক ঢাকার পপুলার হাসপাতাল, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিএসএমএমইউ’র আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের অষ্টম ব্যাচের (৩৯তম এমবিবিএস) শিক্ষার্থী ছিলেন।
ডা. রাজনের মৃত্যুর খবরে রোববার (১৭ মার্চ) সকাল থেকেই স্কয়ার হাসপাতালে ভিড় করতে থাকেন তার সহকর্মী ও স্বজনরা। দুপুরে রাজন কর্মকারের মামা সুজন কর্মকার সেখানে বলেন, গতকাল (শনিবার) রাত আড়াইটার দিকে রাজনের স্ত্রী কৃষ্ণা আমার বোনকে (রাজনের মা) ফোন দিয়ে জানায়, রাজন মারা গেছে।
এসময় কৃষ্ণা অস্বাভাবিক কথাবার্তা বলে। সে বলে, আপনার ছেলে মারা গেছে। উল্টাপাল্টা কিছু করলে সেও আত্মহত্যা করবে। ডা. রাজনকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন সুজন কর্মকার।
স্কয়ার হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ডা. রাজনের মামা সুজন কর্মকার
ডা. রাজনের একাধিক সহকর্মী বলেন, তার এই মৃত্যু কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়। কারণ, এর আগেও রাজনের স্ত্রীর পরিবারের লোকজন তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। ওই সময় তাকে আইসিইউতেও ভর্তি করাতে হয়েছিল।
এদিকে, ডা. রাজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। তবে রাজনের সহকর্মীরা জানিয়েছেন, মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। তারা এ ঘটনায় মামলা দায়ের করবেন। রাজনের মামা সুজন কর্মকারসহ সহকর্মী চিকিৎসকরা শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করতে যাচ্ছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম দুপুরে বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। রোববার দুপুরে মন্ত্রীর (খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার) লোকজন হাসপাতালে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানায় ফোন করলে বিষয়টি জানতে পারি। পুলিশের একটি টিম হাসপাতালে সুরতহাল রিপোর্ট করছে। হত্যার কোনো আলামত পেলে আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
ওসি জানান, মৃতের পরিবার যদি তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে চায়, তাহলে অবশ্যেই ময়নাতদন্ত করা হবে। মামলা করতে চাইলে মামলাও নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে বাদী বা বিবাদীর পরিচয় দেখার বিষয় নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি ।