রাজনীতির খবর: পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সোমবার (১৮ মার্চ) যে ৯৮টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হয়েছে তাতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও আওয়ামী লীগের আধিপত্যে ভাগ বসিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এক-তৃতীয়াংশ উপজেলায় নির্বাচিত হয়েছেন তারা। ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে মারাত্মক অনিয়ম ও আগের রাতে ভোটের বাক্স ভরে রাখার অভিযোগ তুলে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো এ নির্বাচন বর্জন করায় ভোটের আগেই এর আকর্ষণ কমে গেছে। যার প্রমাণ প্রথম দফার মতো দ্বিতীয় দফাতেও সারাদেশের কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের কম উপস্থিতি। তবে এরমধ্যেও নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে অনেকগুলো উপজেলায় জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রতীকের প্রার্থীরা। যদিও নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্রদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী।
রাত দেড়টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে দ্বিতীয় দফার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হচ্ছে এমন ৯৮টি উপজেলার মধ্যে ৯১টির রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষিত ফল আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে দলীয় নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ জিতেছে ৫২টি উপজেলায়। আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, জাতীয় পার্টি, স্বতন্ত্র, বিএনপি বহিষ্কৃত ও পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দল জনসংহতি সমিতির (সংস্কারপন্থী, এমএন লারমা) প্রার্থীরা জিতেছে ৩৮ টি উপজেলায়। রাঙামাটিতে নির্বাচনি কর্মকর্তা ও সদস্যদের ওপরে হামলার কারণে জেলার ৭টি উপজেলার ফল সোমবার রাতে প্রকাশ করা হয়নি। আর খাগড়াছড়ির একটি কেন্দ্রে ফল প্রকাশ স্থগিত রয়েছে।
এ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের জন্য ১২৯টি উপজেলায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তবে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত হয় উচ্চ আদালতের নির্দেশে। এছাড়াও আজ খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় অনিয়ম ও সহিংসতার অভিযোগে তিনটি কেন্দ্রে ভোট না হওয়ায় এ উপজেলায় ফল স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়া যাওয়ায় গোপালগঞ্জের ৫টি উপজেলার নির্বাচন তৃতীয় ধাপে নেওয়া হয়েছে এবং দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাচন চতুর্থ ধাপে নিয়েছে ইসি। আর নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ২৪টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। বেশ কয়েকটি উপজেলায় সবগুলো পদেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা সব কটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন। ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক জয়ী হয়েছে ৫২টি উপজেলায়। স্বতন্ত্র পরিচয়ের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ৩৫টি উপজেলায়। দুটিতে জয়ী জাতীয় পার্টি এবং একটিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস (সংস্কারপন্থী, এমএন লারমা) জয় পেয়েছে। আবার যে ৩৫টি উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন তাদের দুজন দল পরিচয়বিহীন নিখাদ স্বতন্ত্র সদস্য, একজন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত। অবশিষ্ট ৩২ জন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়িয়ে জয় পেয়েছেন।