বিনোদন ডেস্ক : মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ডুব’ (নো বেড অব রোজেস) চলচ্চিত্রটি নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ড। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পত্রিকা ভ্যারাইটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ছবিটি কেন নিষিদ্ধ করা হলো এ বিষয়ে ভ্যারাইটিকে বিএফডিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর তপন কুমার ঘোষ বলেন, ‘এটা বিএফডিসির বিষয় নয়। বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ড বিষয়টি তত্বাবধান করে।’
এ বিষয়ে ফারুকী ভ্যারাইটিকে বলেন, ‘প্রথম পদক্ষেপেই ছবিটি আটকে দেওয়া হয়েছে। তবে ঠিক কি কারণে সেটা করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। আমার ছবির যে কনটেন্ট তাতে কোনও ধরনের সেন্সর রীতি ভঙ্গ করা হয়নি। এটা আসলে বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বলেই আমি মনে করছি।’
এ বিষয়ে ছবিটির প্রধান অভিনেতা ও এর সহ-প্রযোজক ইরফান খান পত্রিকাটিকে বলেন, ‘ছবিটি নিষিদ্ধ করায় আমি সত্যি বিস্মিত হয়েছি। এতে প্রধানত একজন নারী ও পুরুষের জটিল সম্পর্ক ও একটি মানবিক বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এতে সমাজের কি ক্ষতি হতে পারে? আমার বোধগম্য নয়।’
প্রসঙ্গত, ফারুকী প্রয়াত খ্যাতিমান কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ‘ডুব’ ছবি নির্মাণ করেছেন বলে প্রথম খবরটি আসে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকাসহ বেশ কয়েকটি মিডিয়ার মাধ্যমে। এতে হুমায়ূন আহমেদের চরিত্রে ‘ডুব’ ছবিতে অভিনয় করেছেন বলিউড অভিনেতা ইরফান খান। প্রথমে ভ্যারাইটি পরে আনন্দবাজারের এমন খবরে বাংলাদেশে ছবিটি ঘিরে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক।
এর মধ্যে ছবির অন্যতম অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীও ছবিটি যে বাংলাদেশের কিংবদন্তি সাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের জীবনের একটি অংশ নিয়ে নির্মিত হয়েছে- সে বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন দেশীয় মিডিয়ায়। যেখানে ভিন্ন নামে উঠে এসেছে হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ এবং তার কন্যার বয়সী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করার বিষয়টি।
১৩ ফেবরুয়ারি সেন্সর বোর্ডে ‘ডুব’ ছবিটির ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেন হুমায়ূনপত্নী নির্মাতা-অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন।
কাকতাল হলেও সত্যি, গেল বছর ভ্যারাইটি পত্রিকার মাধ্যমেই বাংলাদেশের মিডিয়া প্রথম জানতে পারে ফারকী ও ইরফান খানের এই যৌথ চলচ্চিত্র নির্মাণের কথা।
গত বছর ১৭ মার্চ ‘ডুব’ ছবির শুটিংয়ে অংশ নিতে ইরফান খান ঢাকায় আসেন। সিনেমাটি বাংলাদেশে জাজ মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে ভারতের এসকে মুভিজ ও ইরফান খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ।
এদিকে, ছবিটি নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তার ভাষ্য এমন, ‘এই কয়টা বছর আমরা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় হেডলাইন হয়েছি পজিটিভ কারণে। আর আজকে হেডলাইন হলাম একটা খারাপ কারণে। যে বা যারা সরকারকে বিভ্রান্ত করে এই কাজটা করিয়েছে তারা খুবই বাজে কাজ করলেন ।’
শেষে আবার এটুকুও যোগ করে দেন ফারুকী, ‘বাংলাদেশের আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে।’