খেলার খবর: পারলে ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমের ফলকে ইতিহাস থেকেই মুছে দিতো রিয়াল মাদ্রিদ। গৌরবে ভরা জ্বলজ্বলে ক্লাব ইতিহাসে লস ব্লাঙ্কোসদের জন্য যেন কলঙ্কের দাগ হয়ে আছে সেই মৌসুমের দলটা। কিন্তু বর্তমানের দলটা যেভাবে এগোচ্ছে, একটু এদিক-সেদিক হলে ইতিহাসই গড়া হয়ে যাবে। সেই কীর্তি অবশ্য মোটেও সুখকর হবে না রেকর্ড ১৩বার ইউরোপ সেরা ক্লাবটির জন্য!
লা লিগার ২০১৮-১৯ মৌসুম শেষ হতে আরও বাকি আছে আট ম্যাচ। এই আট ম্যাচের অন্তত পাঁচটিতে নিজেদের অপরাজেয় রাখতে হবে রিয়ালকে। নইলে ক্লাব ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ দলের অংশ হয়ে যাবেন সার্জিও রামোসরা।
১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে সবচেয়ে বাজে ফল গড়া রিয়াল তাদের মৌসুম শেষ করেছিল পঞ্চম স্থানে থেকে! কোপা ডেল রেতে দৌড় থেমেছিল শেষ ষোলোতেই, অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের কাছে হেরে। শঙ্কার ছায়া ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে না পারাতেও। তবে হাঙ্গেরির দল ভিডিওটনকে উয়েফা কাপের(বর্তমানে ইউরোপা) দুই লেগের ফাইনালে হারিয়ে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নিতে পারাটাই ছিল রিয়ালের ওই মৌসুমের একমাত্র অর্জন। কেবল এক মৌসুমে ১৮ ম্যাচে তিক্ত স্বাদ পেতে হয়েছিল সেই দলটিকে!
সেই মৌসুমে শীর্ষে থাকা দল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার সঙ্গে রিয়ালের পয়েন্ট ব্যবধান ছিল ১৭! তখন প্রতি ম্যাচ জিতলে দলগুলো তিন পয়েন্টের বদলে পেত দুই পয়েন্ট করে।
সবচেয়ে খারাপ হওয়ার খুব কাছে চলে গিয়েছিল ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমের দলটাও। সেই দলটা এক মৌসুমে হেরেছে ১৪ ম্যাচ। লিগ শেষ করেছিল চতুর্থ স্থানে থেকে। কোপা থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল টেনেরিফের মতো দলের কাছে হেরে, দুই লেগ মিলিয়ে যে দলের কাছে রিয়াল গোল হজম করেছিল ৫টি! উইনার্স কাপে সেসময়কার উঠতি দল পিএসজির কাছেও পাত্তা পায়নি স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
তবে বর্তমান দলটা কিন্তু এরইমধ্যে উঠে এসেছে মন্দ দলের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। বুধবার ভ্যালেন্সিয়ার কাছে লা লিগায় হেরে মৌসুমে নিজেদের ১৫তম হারের তেতো স্বাদ গিলেছে জিনেদিন জিদানের দল। তাতেই শেষ ২৫ বছরের সবচেয়ে বাজে দলের তকমটা গায়ে লেগে গেছে রিয়ালের!
হারের সঙ্গে চোখে লাগছে যা সেটা গোল হজমের সংখ্যাটাও। ৪৯ ম্যাচে ৬০বার রিয়ালের বিপক্ষে গোল উল্লাস করেছে প্রতিপক্ষ! ম্যাচ প্রতি গড়টা ১.২২। ৩২ ম্যাচে ৬১ গোল খেয়ে তলানির দল হুয়েস্কাই কেবল এগিয়ে রিয়ালের থেকে। শীর্ষে থাকা বার্সার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধানটা দাঁড়িয়েছে ১৩তে। নেই একটি শিরোপা জয়েরও সম্ভাবনা। বাকি আট ম্যাচের পাঁচটিতে হারলে সবচেয়ে বাজে দলের তকমা গায়েতো লাগবেই, ঝুলে যেতে পারে পরের মৌসুমে সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সম্ভাবনাও!
খানিকটা আশার কথা হল, পয়েন্টের দিক থেকে এগিয়ে থাকা বড় কোনো দলের সঙ্গে শেষ আটে দেখা হচ্ছে না রিয়ালের। পয়েন্ট টেবিলের চারে থাকা গেটাফে, অষ্টম-নবম স্থানের অ্যাথলেটিক বিলবাও ও রিয়াল বেটিস এবং দশম স্থানের এইবার কঠিন প্রতিপক্ষ হতে পারে লস ব্লাঙ্কোসদের জন্য। তবে বর্তমানের যে বেহাল দশা চলছে কে জানে ১৯ নম্বরে থাকা রায়ো ভায়েকানো না আবার হারিয়ে বসে রিয়ালকে!