আন্তর্জাতিক

‘ডিম বালক’কে সতর্ক করলো পুলিশ, সিনেটর নির্দোষ

By Daily Satkhira

April 10, 2019

বিদেশের খবর: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার পর বৈষম্যবাদী মন্তব্য করার জন্য অস্ট্রেলিয়ার যেই সিনেটরের মাথায় ডিম ভাঙা হয়েছিল, তিনি আত্মরক্ষার তাড়না থেকে হামলাকারীর ওপর চড়াও হয়েছিলেন বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে পুলিশ।

গতমাসে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম ভাঙার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় একটি বিতর্ক ছড়িয়ে পরেছিল – এই ঘটনার জন্য দু’জনের কোনো একজনকে আইনের আওতায় আনা উচিত কিনা, এবং ইনের আওতায় আনা হলে কাকে আনা হবে। মি. অ্যানিংয়েরে মাথায় ডিম ভেঙে ‘ডিম বালক’ উপাধি পেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করা ১৭ বছর বয়সী ঐ কিশোরকে পুলিশ সতর্ক করেছে, তবে জানিয়েছে যে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হবে না।

নিউজিল্যান্ডের মসজিদ হামলার ঘটনায় সেখানকার মুসলিম অভিবাসীদের দায়ী করে এক বিবৃতি দেয়ার পর মি. অ্যানিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয়।

গত সপ্তাহে ঐ মন্তব্যের জন্য মি. অ্যানিংকে তিরস্কার করে অস্ট্রেলিয়ার সিনেট। এরপর টেলিভিশনে প্রচারিত হতে থাকা এক সংবাদ সম্মেলনে সিনেটরের পেছন থেকে তার মাথায় ডিম ভাঙেন কিশোর উইল কনোলি।

ওই ঘটনার তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়ায় মি. অ্যানিংয়ের সমর্থকরা আক্রমণকারী বালককে প্রতিহত করার আগে সিনেটর নিজেও ঐ বালককে আঘাত করেন।

মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ জানায় যে, ওই বালককে আঘাত করার অপরাধে সিনেটরকে ‘অভিযুক্ত না করার’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

“পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বোঝা যায় যে, ৬৯ বছর বয়সী সিনেটরের প্রতিক্রিয়া আত্মরক্ষামূলক ছিল এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।”

ডিম নিয়ে আক্রমণ করা কিশোরটির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া না হলেও তাকে ‘আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক’ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সে সময় ডিম দিয়ে আক্রমণ করার জন্য অনেকে ওই কিশোরের সমালোচনা করলেও অনলাইনে তার ব্যাপক প্রশংসা করা হয়। দ্রুতই তাকে ‘ডিম বালক’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

ঐসময় তার আইনি সহায়তার জন্য প্রয়োজন হতে পারে বলে একটি অনলাইন প্রচারণায় ৮০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলারের (৪৩ হাজার পাউন্ড) বেশি অর্থ তোলা হয়।

সেসময় বিনামূল্যে কনসার্টের টিকিট পাওয়ার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার সেলেব্রিটিদের দ্বারা প্রশংসিত হয় ঐ কিশোর।

বিভিন্ন দেশের রাস্তায় আঁকা কিছু দেয়ালচিত্র বা ম্যুরালেও গুরুত্বের সাথে জায়গা পায় কিশোরটি।

গতমাসে স্থানীয় গণমাধ্যম টেন নেটওয়ার্ককে কিশোরটি বলেন, “আমি বুঝতে পারি যে, আমি যা করেছি তা সঠিক কাজটি নয়। তবে এই ডিমটি মানুষকে একত্রিত করেছে।”

সিনেটর মি. অ্যানিং অবশ্য তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাননি; যদিও তার ঐ মন্তব্যের পর তার বিরুদ্ধে ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয় এবং তার পদত্যাগ চেয়ে তৈরি করা এক গণ আবেদনপত্রে ১৪ লাখ মানুষ স্বাক্ষর করে।

তবে সিনেটের পক্ষ থেকে মি. অ্যানিংয়ের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা জানানো হয়।

‘ভয়াবহ অপরাধের দায় ভুক্তভোগীদের ওপর চাপানো এবং ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে দোষারোপ’ করার দায়ে তার বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপন করে সিনেট।-বিবিসি