দেশের খবর: ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) আগুনে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ওই থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া মামলাটি অধিকতর তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের সহকারী মহা-পরিদর্শক (এআইজি- মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, মামলাটির অধিকতর তদন্তের স্বার্থে নতুন করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত কক্ষ থেকে ছাদে ডেকে নিয়ে কয়েকজন বোরকাপরা নারী পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার চেষ্টা করে। তারা জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে না নেয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতর ওই ছাত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যাচেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকালে সোনাগাজী পৌর এলাকার ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রী ওই মাদ্রাসা থেকেই আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
এ ঘটনায় ফেনী সদর হাসপাতাল থেকে অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় এদিন বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ১০২ নম্বর কক্ষে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। তাকে লাইফসাপোর্ট দেয়া হয়েছে। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক করতে মঙ্গলবার তার অস্ত্রোপচারও হয়। অস্ত্রোপচারের পরও তাকে নিয়ে শঙ্কা কাটেনি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এর আগে ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ তার অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে ছাত্রীকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধাঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। পরে পরিবারের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ। সেই মামলা তুলে না নেয়ায় অধ্যক্ষের লোকজন ওই ছাত্রীর গায়ে আগুন দিয়েছে।