রাজনীতি

বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন: কানাডার ফেডারেল আদালত

By Daily Satkhira

February 22, 2017

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেছেন কানাডার ফেডারেল আদালত।

বিএনপির সদস্য হওয়ার কারণে একজন বাংলাদেশী নাগরিকের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ করে দেয়ার বিরুদ্ধে করা জুডিশিয়াল রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত বহালের পাশাপাশি দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে মন্তব্য করেন ফেডারেল আদালতের বিচারক।

কানাডাভিত্তিক বাংলা নিউজ পোর্টাল নতুনদেশ ডটকম জানিয়েছে, কানাডা সরকার বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেনি বলে আবেদনকারীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেও আদালত বলেন, ‘তালিকাভুক্তি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। এটি কানাডার গভর্নর কাউন্সিল ঠিক করে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইস্যু জড়িত থাকে। আমি এই যুক্তি গ্রহণ করছি না।’

কানাডা তালিকাভুক্ত করেনি বলেই ইমিগ্রেশন অফিসার বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না- এমন কোনো যুক্তিও এই মামলায় আসেনি।

ফেডারেল আদালতের বিচারক হেনরি এস ব্রাউন গত ২৫ জানুয়ারি ওই মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। জুডিশিয়াল রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি, বিএনপির পরিচালিত লাগাতার হরতাল এবং হরতালকে কেন্দ্র করে পরিচালিত সন্ত্রাসী তৎপরতা সম্পর্কে নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

মোহাম্মাদ জুয়েল হোসেন গাজী নামে ঢাকার মিরপুরের স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়ার পরি তিনি ফেডারেল কোর্টে এই জুডিশিয়াল রিভিউ আবেদন করেন।

রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ করে ২৮ এপ্রিল, ২০১৫ তাকে স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে প্রথম পর্যায়ের অনুমোদন দেয়া হলেও ২০১৬ সালের ১৬ মে তাকে কানাডায় প্রবেশের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বিএনপির সদস্য হওয়ায় তাকে কানাডায় প্রবেশের অনুপোযুক্ত হিসেবে ঘোষণা করে বলা হয়, ‘বিএনপি সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত ছিল, লিপ্ত আছে বা লিপ্ত থাকবে – এটি বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ আছে।

এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা কানাডার ক্রিমিনাল কোডের ধারা তুলে ধরে  বলেন, ‘বিএনপির ডাকা হরতাল  বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিএনপি কর্মীদের হাতে মালামালের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও মৃত্যু এবং আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। আমি লক্ষ্য করেছি অতীতে কোনো কোনো ঘটনায় বিএনপির নেতৃত্ব নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে এবং সন্ত্রাসী তৎপরতার নিন্দা করেছে। কিন্তু বিএনপির দাবি দাওয়া সরকারকে মানতে বাধ্য করতে লাগাতার হরতালের কারণে সৃষ্ট সহিংসতা প্রমাণ করে, এটি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বাইরে চলে গিয়েছে।’

জুডিশিয়াল রিভিউর নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক উল্লেখ করে বিচারক হেনরি এস ব্রাউন বলেন, কানাডার আইনে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে তার আলোকে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই ওই কর্মকর্তা এ উপসংহারে পৌঁছেছেন।

বাংলাদেশের সব সন্ত্রাসীই বড় দুটি দলের সাথে সম্পৃক্ত, তারা হয় আওয়ামী লীগ না হয় বিএনপি’ – আবেদনকারীর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আদালত বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন কি না এই প্রশ্নে অফিসার সিদ্ধান্ত  দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী সংগঠন কি না – সে প্রশ্ন বিবেচনার জন্য আদালতের সামনে নেই।