ভিন্ন রকমের খবর: নবম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্রের বহু নির্বাচনী প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে- ‘বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম কী?’ এই প্রশ্নের সম্ভাব্য যে চারটি উত্তর দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে পর্নোতারকা মিয়া খলিফার নাম! তবে তার নাম লেখা হয়েছে ‘মিয়া কালিফা’।
শুধু তাই নয়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত কিশোর উপন্যাস ‘আম-আঁটির-ভেঁপু’র (প্রশ্নে আঁটি বানানে চন্দ্রবিন্দু নেই) রচয়িতার সম্ভাব্য নাম হিসেবে রাখা হয়েছে সাবেক পর্নোতারকা অভিনেত্রী সানি লিওনের নাম।
এমন অদ্ভুত প্রশ্নপত্রে বুধবার (১৭ এপ্রিল) বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা নিয়েছে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়। প্রশ্নপত্রটির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা জন্ম দিয়েছে সমালোচনার।
শুধু তাই নয়, এই প্রশ্নপত্রে রয়েছে এমন আরও অদ্ভুত বিষয়। চতুর্থ প্রশ্নটিতে প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস কোথায়- এমন প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তরে রাখা হয়েছে রাজধানীর বলধা গার্ডেনের কথা। তবে নামটি লেখা হয়েছে ‘বলদা গার্ডেন’।
আবার ২২ নম্বর প্রশ্ন শেষে যতীন্দ্রমোহন বাগচীর বিখ্যাত ‘কাজলা দিদি’ কবিতার প্রথম দুটি লাইন উদ্দীপক হিসেবে দেয়া হলেও তাতে ‘শোলোক’ শব্দটিকে ভুল করে লেখা হয়েছে ‘শ্লোক’। প্রশ্নপত্রের ১২ নম্বর প্রশ্নের শেষে ‘উদ্দীপক পড়ে ১৩ ও ১৪ সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দাও’ লেখা হলেও সেখানে কোনো উদ্দীপকের উপস্থিতিই নেই। আবার ৯ নম্বর প্রশ্নটিই পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে ১৯ নম্বর প্রশ্নে। এ ছাড়া বেশকিছু বানান ভুল তো আছেই। নবম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এমন অসংগতির সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। একটি স্কুলের প্রশ্নপত্রে কীভাবে পর্নোতারকার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়, তা দেখে রীতিমতো হতবাক অভিভাবকরা।বিষয়টি নিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয় প্রকাশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন ভুল হয়ে গেছে। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। তাছাড়া আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না বলে বিষয়টি প্রথমে জানতে পারিনি। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) প্রশ্ন তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককের সঙ্গে কমিটির একাধিক সদস্য ও আমি মিটিং করেছি। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে।’রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলা বিষয়ের শিক্ষক শংকর চক্রবর্তী। প্রশ্নপত্রটিও তিনিই তৈরি করেছেন বলে জানা গেছে স্কুল সূত্রে।
এ বিষয়ে শংকর চক্রবর্তীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি মানবিক ভুল। আমি বুঝতেই পারিনি এটি এমন বিতর্ক তৈরি করবে। প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আর কখনো এমন ভুল হবে না বলে তাকে আমি কথা দিয়েছি।’
তবে এতে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে কিনা-সে বিষয়ে প্রধান শিক্ষক স্পষ্ট কিছু বলেননি। বিষয়টি কমিটির সদস্যদের ওপর বলে তিনি মন্তব্য করেন।