নিজস্ব প্রতিবেদক : আমার ক্রয়কৃত জমিতে প্রতিপক্ষ জোর করেই নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমি পৌরসভা, সাতক্ষীরা থানা এবং আদালতের শরণাপন্ন হয়ে অনুকূল নির্দেশ পেলেও প্রতিপক্ষ ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মৌ পারভিন নির্মান কাজ বন্ধ করেনি। একজন আবদুল লতিফ যাকে খাটাল লতিফ না বললে মানুষ চেনেনা সেই কুখ্যাত গরু, সোনা ও মাদক চোরাচালানি খাটাল লতিফ মৌ পারভিনের পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছে। আমার জমিতে আমার অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং খাটাল লতিফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আরজি জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন শাহানারা খাতুন। জমি নিয়ে আমাদের বিরোধের মধ্যে খাটাল লতিফের স্বার্থ কি তা যাচাই করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান তিনি। তিনি আরও বলেন ভদ্রবেশি চোরাকারবারি খাটাল লতিফ একজন নারীর রুপে গুনে মুগ্ধ হয়ে তার পেছনে পেছনে ছুটছেন। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন শহরতলির মধুমোল্লারডাঙ্গির শেখ শহিদুল ইসলামের মেয়ে শাহানারা খাতুন। লিখিত বক্তব্যে শাহানারা খাতুন বলেন তিনি ২০০৪ সালে পলাশপোল মৌজায় জেএল নম্বর ৯৪,এসএ খতিয়ান ২৯৫০, খারিজমতে ২৯৫০/০২,ডিপি খতিয়ান নম্বর ৩৬৮১,হাল দাগ নম্বর ১৪৮৫৬ এর এক শতক সম্পত্তি পলাশপোল এলাকার আবদুল আজিজ ওরফে ফটিকের স্ত্রী এলেমাননেসার কাছ থেকে ক্রয় করেন। একই দাগে একই মালিকের কাছ থেকে একই এলাকার ওয়াজেদ মোল্লার পুত্র মিজানুর রহমান মালতু আগেই জমি কেনেন। শাহানারা আর্থিক কারণে এতোদিনে সেখানে কোনো নির্মান কাজ করতে পারেননি। অভিযোগ করে শাহানারা বলেন সম্প্রতি ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মৌ পারভিন, ফরহাদ হোসেন বাবু, মিজানুর রহমান মালতু ও তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন ওই জমিতে নির্মান কাজ শুরু করেন। এতে বাধা দেওয়া হলে তারা জানায় শাহানারার কোন জমি সেখানে নেই। এঘটনা নিয়ে মৌ পারভিনের সাথে তার মারামারিও হয়। তিনি এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাতক্ষীরা থানায় নির্দেশ দেন। পুলিশ এ সংক্রান্ত নোটিশ উভয় পক্ষকে দেয়। শাহানারা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আদালতের এই নির্দেশের পর সাতক্ষীরার শীর্ষস্থানীয় সোনা ও মাদক চোরাকারবারি খাটাল লতিফ ওরফে গো লতিফের সহযোগিতায় প্রতিপক্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নির্মান কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। গত ৯ মার্চ তারিখে বিষয়টি নিয়ে পৌরসভা উভয়পক্ষকে নোটিশ দেয়। তা সত্ত্বেও তারা নির্মান কাজ অব্যাহত রাখে। এরপর বাধ্য হয়ে সাতক্ষীরা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ দুইপক্ষকে নিয়ে কয়েক দফা শালিস বৈঠকের সুযোগ করে দেয়। কিন্তু বৈঠকে হাজির হয়ে মৌ পারভিন ও তার লোকজন তাদের কাছে কোন কাগজপত্র নেই বলে জানিয়ে দেয়। এমনকি পুলিশের সালিশ মানেনা বলেও আস্ফালন করে। এসময় পুলিশ আবারও তাদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও একদিন পর তারা ফের কাজ শুরু করে। শাহানারা খাতুন বলেন এরপর পুলিশকে জানিয়ে আর কোন লাভ হয়নি। গো লতিফ পুলিশকে কোনো না কোনোভাবে জিম্মি করে ফেলেছে। তিনি বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানালে তার নির্দেশও যথাযথভাবে পালিত হয়নি বলে জানান শাহানারা। চোরাকারবারি খাটাল লতিফের দাপটে তারা দিব্যি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যতদুর জানতে পেরেছি খাটাল লতিফের অবৈধ টাকার প্রভাবে দখলদাররা কাউকে তোয়াক্কা করছে না। শাহানারার পক্ষে সব ধরনের কাগজপত্র থাকলেও কেবলমাত্র খাটাল লতিফের কারনে পুলিশ ও আদালতের নির্দেশ অমান্য করছে তারা। অভিযোগ করে তিনি বলেন, খাটাল লতিফ প্রকাশ্যে তাকে হুমকি দিয়ে বলেছে, ‘ওই সম্পত্তিতে গেলে তোর লাশ পড়ে যাবে’। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, খাটাল লতিফের সাথে তার কোন শত্রুতা নেই। অথচ কোন স্বার্থে সে শাহানারার রেকর্ডীয় সম্পত্তি দখলে নিতে চায়। আইন আদালত ও পুলিশ কি তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে? প্রশ্ন রাখেন তিনি। তিনি বলেন, ভারতীয় গরু বাংলাদেশে পাচার করে এবং বাংলাদেশ থেকে সোনা ভারতে পাচার করে অঢেল অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যাওয়া খাটাল লতিফের রসুলপুর এলাকার বহুতল ভবন এখন মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে। অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই চোরাকারবারি খাটাল লতিফ ছিলেন বিডিআর সদস্য। কিন্তু বিডিআরের সাথে থেকে চোরাকারবার করা ও নানা অনৈতিক কাজের জন্য চাকুরিচ্যূত হন। এই লতিফ শহরে সামান্য টাকায় ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। একসময় চুটিয়ে জামায়াত করেছেন। তারপর পরিস্থিতি খারাপ দেখে ভোল পাল্টে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এতে খুব মজা না পেয়ে ফের পাল্টি খেয়ে তিনি এখন তিনি আওয়ামী লীগের বড় নেতা হয়ে গেছেন। তিনি এখন সরকারি পিপি হওয়ার আয়োজন করছেন । ঢাকায় ঢালছেন টাকার পর টাকা। আর সাতক্ষীরার জনপ্রতিনিধিদের পকেটে নিয়ে বেচাকেনার পথও তৈরী করে ফেলেছেন গো লতিফ। শাহানার খাতুন দখলদার ফরহাদ হোসেন বাবু, মৌ পারভিন, মিজানুর রহমান মালতু ও সেলিনা খাতুনকে তার জমি থেকে সরিয়ে দিয়ে কুখ্যাত চোরাচালানী খাটাল লতিফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।