দেশের খবর: ‘ঢাকা ওয়াসার পানি শতভাগ বিশুদ্ধ’ দাবি করে সম্প্রতি বিপাকে পড়েছেন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ. খান। ওয়াসার এমডি’র এমন দাবির পরে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) তার জন্যে রাজধানীর জুরাইন থেকে মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি ওয়াসার পানি দিয়ে সুপেয় শরবত তৈরি করে আনেন।
ওয়াসা ভবন থেকে তাকে প্রথমে জানানো হয়, এমডি সাহেব নেই। পরে তিনি ওয়াসা ভবনের সামনে এলাকাবাসীদেরকে সঙ্গে নিয়ে অবস্থান গ্রহণ করলে তাকে ভেতর ডেকে নেওয়া হয় এবং ওয়াসার এমডি তার সঙ্গে দেখা করেন।
ভুক্তভোগী জুরাইন এলাকাবাসীরা জানান, পানির লাইনে ফাঁটল থাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঘোলা ও দূষিত পানি বের হওয়ায় মঙ্গলবার ওয়াসা ভবনের সামনে তারা এ অবস্থান নেন।
ওয়াসার এমডির সঙ্গে দেখা করে এসে সাংবাদিকদের মিজানুর রহমান বলেন, এমডি সাহেব শরবত পান করেননি। তবে আমাদের অভিযোগ শুনেছেন। আমাদের পানি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশও করেছেন। তবে প্রকৌশলী ডেকে খুব দ্রুত পানির লাইন ঠিক করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং পানির লাইন ঠিক করে শরবত খাবেন বলে জানিয়েছেন।
মিজানুর রহমান আরো জানান, প্রকৌশলীর কাছ থেকে খুব দ্রুত জুরাইনের পানির লাইন ঠিক করার আশ্বাস পাওয়ায় আজকের মতো আমরা কর্মসূচি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পরে এ বিষয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসার এমডি’র পক্ষ থেকে প্রকৌশলী কে এম সহিদ উদ্দিন জানান, নানাকারণে ভূ-গর্ভস্থ পানির লাইনে ফাঁটল বা ত্রুটি দেখা দিতে পারে। এজন্য ওয়াসার সংশ্লিষ্ট জোনে অভিযোগ জানাতে হয়। কোনো এলাকা থেকে আমরা অভিযোগ পেলে খুব দ্রুত লাইনের ত্রুটি ঠিক করি। জুরাইন এলাকার পানির লাইনের ত্রুটিও খুব দ্রুত ঠিক করা হবে।
তিনি আরো বলেন, পানির লাইনের ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে ওয়াসার পানি দূষিত হতে পারে, তবে ওয়াসার পানি অবশ্যই সুপেয়।
শরবত প্রসঙ্গে প্রকৌশলী সহিদ উদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, শরবত অবশ্যই খাব। আজকে নয়। লাইন ঠিক করে দ্রুতই শরবত খাব।
প্রসঙ্গত, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে ওয়াসার অনিয়ম ও পানের অযোগ্য দূষিত পানি সরবরাহের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
টিআইবির এই প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাখান করে গত ২০ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান দাবি করেন, ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ। একে ফুটিয়ে খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
ওয়াসার এমডি’র এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতেই মঙ্গলবার সকাল ১১টায় রাজধানীর জুরাইন এলাকার মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন বাসিন্দা কারওয়ান বাজারে ওয়াসার প্রধান কার্যালয় ওয়াসা ভবনের ঠিক বিপরীতে অবস্থান নেন।