খেলা

শুরু আর শেষের অস্ট্রেলিয়ার মাঝে পিষ্ট ভারত

By Daily Satkhira

February 24, 2017

সকালে দুই অপরাজিত অস্ট্রেলীয় ব্যাটিংয়ে নামলেন। বিকেলে দুই অস্ট্রেলীয় অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়লেন। খুব ক্রিকেটপাগল না হলে সাদা পোশাকে হেলমেটে ঢাকা ক্রিকেটারদের একই রকম লাগার কথা অনেকের! শুক্রবার যারা শুরুতে আর শেষের কিছু অংশ খেলা দেখেছেন, হয়তো ধরেই নেবেন সারাটাদিন ব্যাটিং করেছে কেবল অস্ট্রেলিয়াই! কিন্তু মাঝে ভারতের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে স্টিভ ও’কিফে ঝড়। ৪.১ ওভারের এক স্পেলে মাত্র ৫ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ভারতকে ১০৫ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন এই অজি বাঁহাতি স্পিনার। পরে স্টিভেন স্মিথের ব্যাটিং দৃঢতায় লিডটা ২৯৮ রানের বাড়িয়ে দিন শেষ করেছে সফরকারীরা।

মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে সকালে অস্ট্রেলিয়াকে ২৬০ রানে গুটিয়ে দিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। পরে মাত্র ৪০.১ ওভার স্থায়ী প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকরা গুটিয়ে যায় ১০৫ রানে। ১৫৫ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে অজিদের দ্বিতীয় ইনিংসে সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৪৩।

সামনে পুরো তিনটি দিন। হাতে ছয় উইকেট। লিডটাকে বড় করার সুযোগ থাকছে। তাতে প্রতিপক্ষের জন্য গড়া স্পিন ফাঁদেই ভারতের ব্যাটসম্যানদের আরেকবার হৃদকম্পন বৃদ্ধি করার সুযোগও থাকছে অস্ট্রেলিয়ার। সেজন্য ক্রিজে আছেন ৫৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া অধিনায়ক স্মিথ, সঙ্গী মিচেল মার্শ ২১ রানে।

দ্বিতীয় ইনিংসে অজিদের শুরুটাও অবশ্য ভালো হয়নি। ডেভিড ওয়ার্নারকে (১০) প্রথম ওভারেই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন অশ্বিন। শন মার্শকে রানের খাতাই খুলতে দেননি তিনি। পরে পিটার হ্যান্ডসকম্বকে (১৯) সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন। দিনের খেলার শেষভাগে ম্যাট রেনশকে (৩১) ফেরান  জয়ন্ত যাদব। এর ফাকে ফাকেই লিডটাকে বাড়িয়ে নিয়েছে সফরকারীরা।

এর আগে ভারতের প্রথম ইনিংসে দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর পঞ্চাশ রানের জুটি গড়া রাহানে-লোকেশকে দিয়ে ধ্বংসের সূচনা করেন ও’কিফে। একে একে আরো চার ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠান এই অজি। শেষ পর্যন্ত ১৩.১ ওভারে ৩৫ রানে ৬ উইকেট তার। দুটি উইকেট গেছে স্টার্কের দখলে। একটি করে লায়ন ও হ্যাজেলউডের।

এদিন ও’কিফের বোলিং আর হ্যান্ডসকম্বের চুম্বক ফিল্ডিং ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়ায় ভারতের জন্য। পুনের পিচে স্পিনে খাবি খাবে ব্যাটসম্যানরা, সেটা অনুমিতই ছিল। সেই পিচে ভারতই যে পথ হারাবে তা হয়তো অল্পকজনই ভেবেছিলেন। দিনের মাঝে হলো সেটাই।

রান মেশিন বিরাট কোহলি খাতা খোলার আগেই ফিরেছেন। তার আগে মুরালি বিজয় (১০) ও চেতেশ্বর পূজারা (৬) সাজঘরে। আজিঙ্কা রাহানেকে (১৩) নিয়ে লোকেশ রাহুল যা একটু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেন, কিন্তু তাদের জুটিটি ৫০ রান যোগ করার পর বিচ্ছিন্ন হতেই বিপদ ঘটল।

ভারতের শেষ সাত ব্যাটসম্যান ফিরে গেছেন ১১ রানের ব্যবধানে। স্বাগতিকদের টেস্ট ইতিহাসে যেটি সবচেয়ে লজ্জাজনক ধস। এর আগে ১৯৮৯-৯০ সালে ক্রাইস্টচার্চে ১৮ রানে শেষ সাত উইকেট হারিয়েছিল দলটি। তাতে ২০০৮ সালের আহমেদাবাদ টেস্টের এক ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৬ রানে অলআউট হওয়ার দীর্ঘদিন পর এত কম রানে অলআউট ভারত। গত ১১ বছরে এর চেয়ে কম রানে কেবল আহমেদাবাদ টেস্টেই গুটিয়ে গিয়েছিল স্বাগতিকরা।

ক্ষতিটা পুষিয়ে দিতে দ্বিতীয় ইনিংসে অসাধারণ কিছুই করতে হবে কোহলি-রাহানেদের। তার আগে অপেক্ষা করতে হবে অস্ট্রেলিয়া লিডটাকে ঠিক কোন চূঁড়ায় তুলে তাদের চ্যালেঞ্জ জানায়।