কে,এম,রেজাউল করিম দেবহাটা ব্যুরো : দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পেনশনের টাকা তুলতে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের এক কর্মচারীর নিকট থেকে লক্ষ টাকা ঘুষ বানিজ্যের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ভূক্তভোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের এমএলএসএস আকবার আলী স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তাদেরকে জানালে পরবর্তীতে ঘুষের টাকা বদ হজম হওয়ার উপক্রম। ভূক্তভোগী আকবার আলী জানান, তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের এমএলএসএস হিসাবে চাকরী করেছেন। চলতি বছরে তিনি অবসরে চলে যান। তিনি পেনশনের টাকা নেওয়ার জন্য কাগজপত্র রেডি করতে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপরেটর তানভীরের নিকট গেলে তিনি নৈশ প্রহরী আনিছুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তিনি নৈশ প্রহরী হলেও অফিস সহকারীর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নৈশ প্রহরী আনিছুর রহমানের কাছে গেলে সকল কাগজপত্র ঠিক করতে ১২,০০০ টাকা দাবি করে। আনিছুর রহমানের টাকা দাবি করার বিষয়ে স্টোর কিপার রমেশ তাকে দু-পাঁচ হাজার টাকা দিতে বলেন। এসময় তাদের দাবিকৃত ১২,০০০ টাকা থেকে ৯,০০০ টাকা দেয় নৈশ প্রহরী আনিছুরকে। এরই মধ্যে আনিছুর ১লক্ষ টাকার ঘুষ দাবি করেন। আকবারকে আনিছুর বলে, আপনি একলক্ষ টাকার এক পঁয়সা কম দিলে পেনশনের টাকা উঠাতে পারবেন না। পরে আনিছুর ও তানভীর তার কাগজ পত্র ঠিক করে দেওয়ার পর পেনশনের টাকা উত্তোলনের সময় এক লক্ষ টাকা ও কাগজ ঠিক করতে ১২,০০০ টাকার বাকি ৩০০০টাকা দিতে হয়। বিষয়টি লোকমুখে অফিসের বিভিন্ন কর্মচারীদের কানে গেলে স্থানীয় মজিদ নামের একব্যক্তির মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে ৫০,০০০ টাকা ফেরৎ দেয় এবং এক সপ্তাহ পরে ২০,০০০টাকা দেওয়ার কথা জানিয়ে দেয় নৈশ প্রহরী আনিছুর ও অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপরেটর তানভীর।আকবার আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম জানান, আমার পিতা চাকরী জীবনে সৎ ভাবে চলেছেন। কিন্তু আমার পিতার সরলতার সুযোগ নিয়ে হাসপাতালের কিছু অসাধু ব্যক্তিদের নিকট লক্ষাধিক টাকা দিতে হয়েছে, এটি আমাদের পরিবারের কাছে খুবই দুঃখের বিষয়। আমার পিতার পেনশনের টাকা উঠানোর জন্য যে ঘুষের টাকা দিতে হয়েছে সে টাকা যতি ফেরৎ না পাই তাহলে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করবো।এবিষয়ে নৈশ প্রহরী আনিছুর রহমানের কাছে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আকবার এক লক্ষ বার হাজার টাকার কথা বলছে সেটা পুরোপুরি সঠিক নয়। আকবার আলীর পেনশনের টাকা উঠানোর জন্য তার নিকট থেকে শুধু মাত্র সত্তর হাজার টাকা নিয়েছি। উক্ত টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে দিয়েছি এবং বাকি বিশ হাজার টাকা এক সপ্তাহ পরে দিয়ে দেব। তবে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ঘুষ নিয়ে অন্যায় করে ফেলেছি। তাই আকবারের কাছে মাফ চেয়েছি।তবে এবিষয়ে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপরেটর তানভীরের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি। তাছাড়া এবিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারবো না। কিন্তু তার কিছু সময় পরে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে দিয়ে বিষয়টি ম্যানেজ করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়।উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. রনজিত কুমার রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।