কালিগঞ্জ

কালিগঞ্জের চৌমুহনী মাদ্রাসায় অর্ধলক্ষ টাকা আত্মসাৎ!

By Daily Satkhira

May 05, 2019

কালিগঞ্জ প্রতিনিধ‌ি:

পরিদর্শন করতে গিয়ে বেরিয়ে আসলো লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর কাহিনী। শিক্ষক হাজীরা খাতা থাকে তালাবদ্ধ, হাজিরা খাতায় কে স্বাক্ষর করবে, আর কে করবে না এটা নির্দেশের অপেক্ষায় থাকেন চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যক্ষ। মামলার জটিলতায় থাকা শিক্ষকদের বেতন ছাড় করতে নেওয়া হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। মাদ্রাসার বড় বড় গাছগুলো বিক্রির টাকার হদিস নেই। এমনি ভাবে একের পর এক বেরিয়ে এসেছে থলের বিড়াল। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার। রবিবার (৫ মে) বেলা ১১ টায় শিক্ষা অফিসের প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মাদ্রাসার শিক্ষক, সাংবাদিক ও গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে অভিযোগের প্রেক্ষীতে পরিদর্শন করেন কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী। উপজেলা চেয়ারম্যান আসবেন এ সংবাদে অত্র মাদ্রাসার চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যক্ষ, বহু অপ-কর্মের সাক্ষী মাওঃ মনিরুজ্জামান গুরুত্বপুর্ন কাগজপত্র ও চাবী নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। উপজেলা চেয়ারম্যান মোবাইলের মাধ্যমে কল করলেও তিনি রিসির্ভ করেননি। একপর্যায়ে মাদ্রাসার নাইটগার্ড আনার হোসেন মাওঃ মনিরুজ্জামানের নম্বরে কল করলে রিসির্ভ করেন এবং এখন কি অবস্থা জানতে চান। নাইট গার্ডের নিকট থেকে মোবাইলটি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান কথা বলতে চাইলে ধুরন্ধর অধ্যক্ষ মোবাইল বন্ধ করে দেন। ততোক্ষণে একঘন্টা অতিক্রম হয়ে যায়। এদিকে মাদ্রাসার দপ্তরী মুনসুর আলীর নিকট হাজীরা খাতা, বার্ষিক আয় ব্যায়ের হিসাবসহ বিবিধ বিষয়ে জানতে চাইলে কিছু জানেননা বলে জানান, সবকিছু প্রিন্সিপ্যাল হুজুর জানেন। এদিকে নাইট গার্ড আনার এর তথ্যমতে মনির হজুর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুল হক সরদারের দোকানে ছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান আনারকে দিয়ে মনিরুজ্জামান হুজুরকে ডাকতে পাঠান। এসময় আনার এর সাথে তিনি চলে এসে বলেন সভাপতি ও দাতা সদস্য (কথিত) আবু তালেব সরদার আমাকে আসতে বাঁধা দিচ্ছিলেন। এরপরে একটু একটু করে বেরিয়ে আসতে শুরু করে শিক্ষকদের জিম্মি করে হাতিয়ে নেওয়া প্রায় অর্ধ কোটি টাকার খতিয়ান। কিন্তু অধ্যক্ষ তালবাহানা করতে থাকেন শিক্ষক হাজীরা খাতা বাহির করতে। একপর্যায়ে গোপনে রক্ষিত খাতাটি বাহির করলেন অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান। শিক্ষা অফিসের প্রতিনিধি হাজীরা খাতায় দেখেন চলতি সপ্তাহে কোন শিক্ষকের হাজীরা নেই। তাছাড়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওঃ আব্দুল কাদের হেলালীকে আদালতের আদেশ থাকার স্বত্তেও তাকে স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়না দীর্ঘদিন। এমনি ভাবে প্রায় ১১ জন শিক্ষককে হাজীরা খাতায় স্বাক্ষর করাতে করা হয় লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজি। মাদ্রাসার ২৭টি শিশুফুল ও মেহগনি গাছ কেটে তারমধ্যে ১টি গাছ মাদ্রাসার কাজে লাগানো হয়েছে, বাকী ২৬ টি গাছ ২১ লক্ষ টাকা বিক্রি করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এসব কথা অবলিলাক্রমে লিখিতভাবে জবানবন্ধী দিয়েছেন চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান তদন্ত চলাকালে উপস্থিত জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও সুধীবৃন্দ আরও লোমহর্ষক কাহিনী বলেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুল হক সরদার ও দাতা সদস্য আবু তালেব সরদার সহ অন্যান্য সদস্যের বিরুদ্ধে। পরিদর্শনকালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাদ্রাসার সার্বিক উন্নয়নে অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী ও চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামানকে মিলেমিশে কাজ করার আহবান জানান এবং আব্দুল কাদের হেলালীসহ সকল শিক্ষকের হাজীরা খাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ব্যানবেইস ইউ আই টি আর সি ই এর প্রোগ্রাম অফিসার নাছিম ছায়াদত, ইউপি সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, চৌমুহনী ঈদগাহ কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সরদার, সাংবাদিক সাজেদুল হক সাজুসহ শতাধীক ব্যাক্তিবর্গ।