নিজস্ব প্রতিবেদক : সমাজের আর পাঁচ জন মানুষের মত ঠিকমত হাঁটাচলা করতে পারে সে। উচ্চতা ও অনেক কম। সাথে আছে শহীরের নানা রোগের বাসা। যা বয়স তা ছাড়া দেখতে অনেক বয়স্ক মনে হয়। আর পাঁচ জনের চেয়ে শরীরে শক্তিও অনেক কম। তার পরও বসে থাকার পাত্র সে না। জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার জন্য বেছে নিয়েছে কঠিন পরিশ্রমের পথ। পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করে সে। বলছি সাতক্ষীরা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড এর কুকরালী গ্রামের মৃত রজব আলীর ছেলে ইব্রাহীম সরদার এর কথা। বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘাস কেটে এনে শহরের বাড়িতে বাড়িতে বিক্রি করা পরিচিত মুখ ইব্রাহিম। এক আটি ঘাস কেঁটে আঁটি বেধে গ্রাহকের বাড়িবাড়ি পর্যন্ত পৌছে দিলে তার পর মেলে ২ টাকা। তাও আবার সব দিন ঘাস পাওয়া যায় না। অন্যান্য বিক্রেতাদের চাপ তো আছে। যেদিন ভাল ঘাস বিক্রি হয় সেদিন ২৫০-৩০০ টাকা আর যেদিন হয় না সেদিন হয় না। ঘাস বিক্রি হলে চুলা জ¦লত আর না হলে প্রায় উপোষ থাকতে হত স্ত্রী,দুই কন্যা সহ বৃদ্ধ মাকে। তার পরও কখনও ভিক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়নি ইব্রাহীম। বৃদ্ধ মায়ের ঔষুধ,দুই কন্যার লেখাপড়া, নিজের ঔষুধ,তার পর সংসারের খরচ, এভাবেই নিজের সমস্যার কথা বলছিল ইব্রাহিম। প্রতিদিনের ন্যায় গত ১৮অগাস্ট ১৮ তারিখে শহরে ঘাস বেঁচতে গেলে নিজের ঘাস বোঝায় ভ্যানের সাথে এক ইজিবাইকের ধাক্কা লেগে রাস্তার ওপর পড়ে গেলে ইজিবাইকের চাকা নিজের পেট ও পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়। দীর্ঘদিন সদর হাসপাতালে পড়ে থাকার পর গত তিন মাস আমি বাড়িতে ফিরলেও লাঠি বা ট্রাস ছাড়া আর আগের মত হাঁটতে পারি না। ভ্যান চালানোর শক্তি আর আমার নেই। অভাগা যে দিকে চায় নদীর পানিও সেদিকে শুকিয়ে যায়। গত রমজান মাসে আল-হেরা ফাউ-েশন সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাব থেকে আমাকে ছাগল দিয়েছিল ,দুইটো বাচ্চাও হয়েছিল তাও অসুখের কারনে বেঁচে দিতে হল। এখন বাঁচার তাগিদে লাঠিতে ভর করে শহরের বড় বাজার এলাকায় ভিক্ষা করি। মানুষের কাছে এভাবে হাত পাঁততে আমার ভাল লাগে না। নিজের কাছে খুব ছোট মনে হয়। অনেক বার এলাকার কাউ¯িœলর এর কাছে গেছি প্রতিবন্ধি ভাতার জন্য তিনি শুধু আমাকে আশ^াস দেন। আমি এখনও কোন ভাতা পাইনা। সামাজের বিত্তবানরা যদি আমাকে একটু সহায়তা করে তবে আমি ভিক্ষা করা বাদ দিতে চাই। আমি যেমন পারি তেমন কর্ম কারে খেঁতে চাই। আমি প্রতিনিয়ত কারও করুনার দান হাত পেতে নিতে চাই না। এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউ¯িœলর শহিদুল ইসলাম বলেন। আমি ইব্রাহিমকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। সে আসলেই শারীরিক প্রতিবন্ধী তবে কোন ভাতা পায় না। সে আসলেই প্রতিবন্ধি ভাতা পাওয়ার একজন যোগ্য লোক। আমি দ্রুত তার প্রতিবন্ধী কার্ড দেওয়ার জন্য জেলা সমাজসেবা অফিসার এর সাথে কথা বলব। এই বিষয়ে জেলা সমাজসেবা অফিসার দোবশিষ ম-ল এর ফোন নাম্বার ০১৯২৫০৭৮৫৪২ রবিবার সন্ধা ৭.৩৫মিনিটে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। সমাজের বোঝা না হতে চাওয়া ইব্রাহিমরা সকলের একটু সহায়াতা পেলে এগিয়ে যাবে। অংশ নেবে দেশ গড়ার কাজে।