বিনোদন

এসএসসি পাশ করলো দিঘি

By Daily Satkhira

May 06, 2019

বিনোদন সংবাদ: ‘বাবা জান? আমাদের বাসায় যে ময়না পাখিটা আছে না? ও না আজকে আমার নাম ধরে ডেকেছে। আর এই কথাটা না মা কিছুতেই বিশ্বাস করছে না। কেমন লাগে বল তো বাবা? আমি কি তাহলে ভুল শুনেছি? তুমি আজকে বাসায় এসে মাকে অবশ্যই বকে দেবে। আচ্ছা বাবা রাখি তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো কিন্তু।’-এই সংলাপটি যে ছোট্ট মেয়েটির কণ্ঠে শোনা যেত সেই দিঘী কিন্তু আর ছোট্টটি নেই। শিশুশিল্পী হিসেবে ৩৬টি সিনেমায় অভিনয় করার পর হঠাৎ বিরতি। এরপর আর দেখা যায়নি এই ক্ষুদে তারকাকে। পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়ার কারণে তাকে আর শোবিজে দেখা যায় না।

সেই ছোট্ট দিঘি এখন মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করেছে। চলতি বছরের সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে স্ট্যামফোর্ড স্কুল ও কলেজ থেকে ‘এ-মাইনাস’ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৩৬টি সিনেমায় অভিনয় করা এই ক্ষুদে তারকা। আজ সোমবার দুপুরে ফলাফল ঘোষণার পর খবরটি জানিয়েছেন তার বাবা অভিনেতা সুব্রত বড়ুয়া।

সুব্রত বড়ুয়া বলেন, দীঘির রেজাল্ট আশাব্যঞ্জক হয়নি। সে জিপিএ-৩.৬১ পেয়েছে। এতেই আমরা খুশি। সামনে ভালো একটি কলেজে ভর্তির চেষ্টা করবো। পড়াশোনাটায় আরও মনযোগ দিতে হবে তার।

পরীক্ষার জন্য এতদিন শোবিজ থেকে দূরে ছিলেন দিঘি। তবে এখন কি আবারও ফিরবেন এমন প্রশ্নে দিঘির বাবা বলেন, মাত্রই তো এসএসসির রেজাল্ট হাতে পেলাম। যদি সুযোগ সুবিধা মতো ভালো কিছুর প্রস্তাব আসে তাহলে অবশ্যই অভিনয় করবে। এতে আমার আপত্তি থাকবে না। কিন্তু আমি চাইবো সে যেন পড়াশোনাটা ঠিকমত চালিয়ে যায়।

অভিনয়ের প্রতি দিঘির আগ্রহ প্রসঙ্গে সুব্রত বড়ুয়া আরও বলেন, আমি আর দিঘীর মা দুজনেই চলচ্চিত্রের মানুষ। দিঘির মা গত হয়েছেন ৭ বছরেরও বেশী সময় হয়ে গেলো। আর দিঘী তো শিশু শিল্পী হিসেবে অনেকগুলো ছবিতেই অভিনয় করেছে। আমি জানি ওর ভিতরে অভিনয়ের তেজটা কত। ও সেটা ভেতরে লালন করে। আমি মনে করি সে নিজেকে আরও প্রস্তুত করুক তারপর না হয় একটা কিছু করুক।

যোগ করে আরও বলেন, গ্ল্যামার জগতটা মানুষকে খুব আকৃষ্ট করে। নায়িকা মানেই তো গ্ল্যামার। একটা সময় যখন ভিতরে স্টার ভাবটা চলে আসে তখন কিন্তু সাধারণ হতে অনেক কষ্ট হয়। দিঘী এমন একটা জায়গায় ছিলো তার অভিনয় দিয়ে, তার এতটুকুন বয়সে সেটা সত্যিই অনেক গর্বের। এখন তো আর কেউ আমাকে আমার নামে চেনেন না, সবাই চেনেন দিঘীর বাবা হিসেবে। আর যে জায়গাটায় দিঘি তার অভিনয় শেষ করেছিলো সেটা যেনো আরও অতিক্রম করতে পারে সেজন্য তাকে কিন্তু তৈরি করতে হবে। লেখা পড়াটা ঠিক মত শেষ করতে পারলে সে নিজেকে ঠিকমত তৈরি করতে পারবে। আমি শুধু দেখিয়ে দিতে পারবো এটা ভালো রাস্তা, এটা খারাপ রাস্তা। সে নিজে যখন জানতে পারবে ভালো রাস্তা দিয়ে যাওয়া ভালো, খারাপ রাস্তা দিয়ে যাওয়া ভালো না তখন সেই নির্ধারণ করে নিবে সে কোন পথে যাবে, আমার বলতে হবে না। এই রাস্তাটা যদি তৈরি করে দিতে না পারি তাহলে সে কিছুই করতে পারবে না। এজন্য তার কাজ করা বন্ধ করে রেখেছি, আগে সে বুঝুক নিজের জন্য কোনটা ভালো কোনটা মন্দ! তারপর সে নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।

প্রসঙ্গত, গ্রামীনফোনের বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে সকলের নজরে আসেন দিঘী। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘কাবুলিওয়ালা’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৬টি সিনেমায় শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে এ সময়ের প্রায় অনেক তারকাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। ২০১২ সালের পর তাকে আর সিনেমাতে দেখা যায় নি।

প্রথম চলচ্চিত্রে ‘কাবুলিওয়ালা’তে অভিনয় করেই ২০০৬ সালে ‘শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী’ হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে দিঘী। তারপরে আরও দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কারণে শ্রেষ্ঠ শিশু চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করে সে। দিঘি অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘দাদীমা, চাচ্চু্‌, সাজঘর, বাবা আমার বাবা, ১ টাকার বউ, অবুঝ শিশু, রিকসাওয়ালার ছেলে, চাচ্চু আমার চাচ্চু, দ্যা স্পিড’।