আশাশুনি

কোন ভাবে থামছে না পাইথালীতে বালু উত্তোলণ

By daily satkhira

May 07, 2019

আশাশুনি ব্যুরো: আশাশুনির বুধহাটা ইউনিয়নের পাইথালী বাজারের জেলা পরিষদের পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের খাবার পানি চাহিদা মিটিয়ে আসছিলো। সম্প্রতি পুকুরটি খননের উদ্যোগ গ্রহণ করে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। খননের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খননসহ পুকুরের পাড় বাঁধের কাজ সম্পন্ন করে। পুকুরটি পূর্ণরায় সূপীয় খাবার পানি সরবরাহের জন্য প্রস্তুত করা হলেও স্থানীয় কিছু কুচক্রিমহল ও মেশিন মালিক যোগসাযোগ করে পুকুরের ভূ-গর্ভ থেকে আইন কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বে-আইনি ভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এব্যাপারে বাজারের একাধিক দোকানী ও সচেতন মহল সাংবাদিককের কাছে অভিযোগ করলে সাংবাদিকরা সরেজমিন ঘূরে ভূ-গর্ভ থেকে বালু উত্তোলনের স্বচিত্র তুলে ধরে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। যেখানে কিনা বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৬২নং আইনে সু-স্পষ্ট ভাবে লেখা আছে, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোন মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ হইতে বালু বা মাটি উত্তোলণ করা যাবে না। সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি পাকা স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনি¤œ ১ (এক) কিলোমিটার সীমানার মধ্যে থেকে বালু উত্তোলণ করা যাবে না। বালু বা মাটি উত্তোলণ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত বিধান কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অমান্য করিলে বা এই আইন বা বিধান লংঘন করলে অথবা বালু বা মাটি উত্তোলণের জন্য বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে বালু বা মাটি উত্তোলণ করলে সেই ব্যক্তিকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট (এক্সিকিউটিভ বডি) অনূর্ধ্ব ২(দুই) বৎসর কারাদন্ড বা সর্বনিম্ন ৫০(পঞ্চাশ) হাজার টাকা হতে ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করবেন। জেলা পরিষদের এ পুকুরের ভূ-গর্ভ থেকে অবৈধ্য ভাবে বালু উত্তোলণের ফলে পুকুরের পাশে দুই শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি এলজিইডি সড়ক, মসজিদ ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবণ হুমকির মুখে দাড়িয়ে আছে। অন্যদিকে বালু উত্তোলণের ফলে কোটি টাকার বিনিময়ে সদ্য খননকৃত জেলা পরিষদের পুকুরের চার পাশের ঢালের মাটি ধ্বস নেমে পুকুরে পড়ছে। স্থানীয়রা জানান, জেলা পরিষদের ঠিকাদারী আব্দুর রাজ্জাক পুকুর খননে ব্যাপক অনিয়ম করেছে এবং বাবু গোহ এবং উৎপল নন্দির বাশ বাগান, দুলাল দে’র পুকুর ও আশ পাশের বহু পুকুর, খানা, নিচু এলাকা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে উক্ত সরকারি পুকুর থেকে বালু উত্তোলণ করে ভরাট করেছে। বর্তমানে আবারও স্থানীয় সুব্রত কুমার দে’র রেকর্ডীও একটি জমির গর্ত বিশ হাজার টাকার বিনিময়ে ভরাট করছে। এটা ভরাটের কাজ সম্পন্ন হলে, আশপাশের আরও কয়েকটি নিচু জমি উক্ত সরকারী পুকুর থেকে বালু উত্তোলণ করে ভরাট করা হবে বলে জানাগেছে। ঠিকাদার আব্দুর রাজ্জাকের খুটির জোর কোথায়? তার অনুসন্ধানে গেলে মেশিন মালিক জয়নাল হোসেন বলেন আমার ঠিকাদার আমাকে বলেছে, যত টাকা জরিমানা হয় হোক, এমনটি তোমার মেশিন তুলে নিয়ে গেলেও আমি তোমাকে জরিমানার অর্থসহ নতুন মেশিন কিনে দেবো। তুমি বালু উত্তোলন বন্দ করবে না। ভূ-গর্ভ থেকে অবৈধ্য ভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা বলেন, যেহেতু পুকুরটি জেলা পরিষদের, সেহেতু তাদের প্রতিষ্ঠানের দূর্ণীতির বিষয়ে তারাই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। কিন্তু তারা যদি বিষয়টি আমলে না নেন, তবে ভূ-গর্ভ থেকে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।