কলারোয়া

কলারোয়ার জয়নগরে সংখ্যালঘুর জমি দখলের চেষ্টায় মরিয়া জামায়াত কর্মী মশিয়ার

By daily satkhira

May 13, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক সময়কার জামায়াতের সক্রিয় কর্মী নব্য আওয়ামী লীগার সেজে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার খোর্দ্দ-বাটরা গ্রামের মশিয়ার রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা জয়নগর গ্রামের স্বপন বসুর জমি জবরদখলের পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জয়নগর গ্রামের নিরাপদ বসুর ছেলে স্বপন কুমার বসু জানান, জয়নগর মৌজার ৯৪০ খতিয়ানের এসএ ৮০,৮১সহ ১০টি দাগে ৩.৪৭ একর অর্পিত সসম্পত্তির মধ্যে তার পৈতৃক জমি ২.৬৫ একর জমি। অবমুক্তির মামলা করে তারা বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি দেওয়ানী রিভিশন ৩৭/২০০৩ মামলায় ২০১১ সালের ১৫ মার্চ জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত থেকে রায় ডিক্রী পান। পৈতৃক ২.৬৫ একরের মধ্যে এসএ খতিয়ান ৯৪০ ও ৯৪০/১ এর ৮০ দাগে ১.২৬ ও ৮১ দাগের ২৮ শতক ব্যতীত বাকী ৮৪ শতক জমি ভিপি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া কাকা নীল রতন বসু নিঃসন্তান হওয়ায় অংশীদার হিসেবে তিনি ১/১ খতিয়ানভুক্ত ‘ক’ তপশীলের ২.২৩ একর জমি অবমুক্তির জন্য অর্পিত সম্পত্তি ট্রাইব্যুনালে (৪৮৩/২০১২ ) মামলা করেন। স্বপন কুমার বসু জানান, নিজেদের দখলে থাকা জমি ২০১১ সালে আদালতের রায় ডিক্রী পাওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট জয়নগর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম আর্থিক সুবিধা নিয়ে খোর্দ্দ-বাটরা গ্রামের শেখ আবুল কাশেমের ছেলে মশিয়ার রহমান ও মফিজুল ইসলামসহ কয়েকজনের নামে ২.৩৬ একর জমি একসনা ডিসিআর দেন। জানতে পেরে তিনিও গত বছরের ২৫ জুলাই উপজেলা সহকারি ভূমি কশিশনারের কাছে ডিসিআরের আবেদন করেন। জয়নগর ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা শেখ মুনজির আহম্মেদ ওই জমি কোনদিনও মশিউর রহমানদের দখলে ছিল না ও স্বপন বসুদের পৈতৃক বিধায় নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেফিডের মাধ্যমে তাকে একসনা ডিসিআর দিলে কোন ঝামেলা থাকবে না বলে সহকারি ভূমি কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন দেন। এদিকে স্বপন বসুদের ডিক্রীপ্রাপ্ত জমি দূর্ণীতির মাধ্যমে দখল দেখিয়ে ডিসিআর নিলেও দখল পেতে মশিয়ার জেলা প্রশাসকের গণশুনানী অনুষ্ঠানে আবেদন করেন। বাংলা ১৪২৫ সালের ৩১ চৈত্র ডিসিআরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় মশিয়ার রহমান ও তার শরিকগন আবারো ডিসিআরের আবেদন করে জমি জবরদখলে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিরণ শঙ্কর বসুর সাক্ষর জালিয়াতি করে ১৯৯২ সালের ২৪ মার্চ ১১৬৮/৯২নং দলিল সৃষ্টির অভিযোগে কলারোয়া থানায় তার (স্বপন) দায়েরকৃত জিআর-৯৬/৯৩নং মামলায় ১৯৯৭ সালের ২৯ এপ্রিল মশিয়ার রহমানসহ তিনজনের আট বছর জেল হয়। ক্রিমিনাল আপিল ৩৭/৯৭ মামলায় ওই দলিলমূলে তারা জমি দাবি করেন না এবং এই দলিল সম্পর্কে কিছু জানে না উল্লেখ করে জজ কোর্ট থেকে মশিয়ার জামিন পান। আপিল মামলাটি অতিরিক্ত জেলা জজ প্রথম আদালতে চলমান রয়েছে। যদিও কলারোয়া সহকারি জজ আদালতে তার (স্বপন) দায়েরকৃত দেওয়ানী স্বত্বপ্রচারের মামলায় (৩১৫/১১) ওই জাল দলিল মূলে জমি দাবি করে চলতি বছরের ২০ ফেব্র“য়ারি পক্ষভুক্ত হয়েছেন। কিন্তু বাদী পক্ষে আইনজীবী আদালতকে জানান ওই দলিলটি জাল। তারপরও পক্ষভূক্ত হয়েছে। ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জামায়াতের সক্রিয় কর্মী মশিয়ার ও তার ভাইয়েরা তার (স্বপন) মা বাসন্তী বসু ও বোন সুনু রানী দে কে পিটিয়ে জখম করে জমি দখলের চেষ্টা চালায়। বর্তমানে আবারো জমি জবরদলের চেষ্টা চালালে বিগত ২০১২ সালের তদন্ত প্রতিবেদনে মশিয়ারগং জামায়াত বিএনপি সমর্থিত সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়। মশিয়ার ও তার পক্ষের লোকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে নব্য আওয়ামী লীগার সেজে তাদের জমি আবারো জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এঘটনায় তিনি ৫ এপ্রিল ১৯ তারিখে থানায় একটি অভিযোগ করেন। স্বপন কুমার বসু আরো জানান, ওই সম্পত্তি নিয়ে তারা চরম উদ্বিগ্নতার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। যে কোন সময় ওই চিহ্নিত জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসী মশিয়ার গং তাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করতে পারে এবং বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে এদেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে পারে। এবিষয়ে ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু পরিবারটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষা এবং ওই মশিয়ারের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার, এমপিসহ সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।