জাতীয়

ওসি পদে রাষ্ট্রপতির কাছে বিসিএস ক্যাডার চাইলো দুদক

By Daily Satkhira

May 14, 2019

দেশের খবর: থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও পাসপোর্টের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফেকিশন বাতিল অথবা নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (১৩ মে) বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের নেতৃত্বে কমিশনের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে দুদকের ২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করে এ সুপারিশ করে।

প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম ও সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের অনুশাসন অনুসারে প্রতি বছর এ প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে দাখিল করা হয়।

প্রতিবেদনটি হস্তান্তর শেষে বঙ্গভবনের বাইরে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রপতি দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদক-কে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে বলেছেন। তিনি শ্রেণিকক্ষে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য করণীয় সবকিছু করতে পরামর্শ দিয়েছেন।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রপতি স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও দুর্নীতি নির্মূলে কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড পেতে হলে স্বাস্থ্য এবং মানসম্মত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই বলে দুদককে সতর্ক করেছেন।

এছাড়া আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত কর্মীদের যদি কোনো দুর্নীতি বা অনিয়মের খবর আসে তাও যেন কমিশনের নজরে থাকে সে বিষয়েও রাষ্ট্রপতি দুদককে পরামর্শ দিয়েছেন।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যে বা যারা সরকারি সম্পত্তি- যেমন রেলের জায়গা, সড়ক বিভাগের জায়গা, গণপূর্ত কিংবা খাস জমি, বন বিভাগের জমি, চান্দিনা ভিটা, ইত্যাদি জমি/সম্পদ অবৈধভাবে দখল করে বিলাসবহুল রিসোর্ট বানিয়েছেন কিংবা অন্য কোনোভাবে দখল করে রেখেছেন, তাদেরকে কমিশনের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাই, এসব সম্পত্তি সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থায় ফিরিয়ে দিন। জনগণের সম্পদ জনগণকে ফিরিয়ে দিতেই হবে। নইলে কঠোর আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি বলেন, ব্যাংকিংখাত নিয়ে কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট। ব্যাংক তার নিজস্ব বিধি-বিধান অনুসারে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করবে। তাতে কমিশন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। ব্যাংকিং নিয়মকানুন মেনে ব্যবসায়ীরা ঋণ নেবেন এবং ব্যাংকাররা ঋণ দেবেন। এতে দুদক কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না।

তবে পরস্পর যোগসাজশে জাল-জালিয়াতি এবং প্রতারণা করে ব্যাংকের অর্থ লোপাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত রাখা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

কমিশনের পক্ষ থেকে আমাদের বক্তব্য, যারা ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে ঋণ নিয়েছেন বা ঋণ দিয়েছেন তারা জনগণের এই অর্থ সমন্বয় করুন। নইলে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে, বলেন দুদক চেয়ারম্যান।

দুদক সরকারের তল্পিবাহক এমন এক প্রশ্নে জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অসম্ভব। দুদক কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। যে কারণে দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের কাছে দাখিল না করে রাষ্ট্রপতির কাছে বঙ্গভবনে এসে দাখিল করছি।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে দুদকের সরকার বা অন্য কোনো সংস্থার তল্পিবাহক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করেন তিনি।

দুদক শুধু চুনোপুঁটিদের ধরে এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এদেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করেন। তারাই এই কথিত চুনোপুঁটির দুর্নীতি, অনিয়ম এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার। কারণ তৃণমূল পর্যায়ে এইসব চুনোপুঁটিরাই সরকারি সেবা দিয়ে থাকেন।

তাই গ্রামের এই সাধারণ মানুষকে যে বা যারা দুর্নীতি অনিয়মের শিকার বানাবেন তাদেরকে ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না। এইসব চুনোপুঁটিদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া আরও দৃঢ় করা হবে বলে জানান তিনি।