আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনাল ভাংচুরের মামলায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. শাহ আলম ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এড. তোজাম্মেল হোসেন তোজামসহ ১৫ আইনজীবীকে ২ বছর ৬ মাস কারাদ-, ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদ- প্রদানের দেড় ঘণ্টা পর জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।
সাতক্ষীরার দ্রুত বিচার আদালতের বিচারকের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে উক্ত আইনজীবীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করার পর সে আপিল গৃহীত হয় এবং ১৫ আইনজীবীর জামিন মঞ্জুর করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরার দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক হাবিবুল্লাহ মাহমুদ এ সাজার রায় প্রদান করেন এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জোয়াদ্দার মোঃ আমিরুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। একই সাথে এ মামলায় শাহেদুজ্জামান শাহেদ ও সরদার সাইফ নামের দুই আইনজীবীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।
১৫ আইনজীবী হলেন, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড.শাহ আলম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এড. তোজাম্মেল হোসেন তোজাম, সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, তোহা কামাল হীরা, মোস্তফা আসাদুজ্জামান দিলু, আকবর আলী, অসিম কুমার, মিজানুর রহমান বাপ্পী, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, আব্দুস সামাদ(৪), সাইফুল ইসলাম, সোহারাব হোসেন, আনিছুজ্জামান আনিছ ও সোহরাব হোসেন বাবলু।
এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাতক্ষীরা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এড. ফাহিমুল হক কিসলু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর আইনজীবীরা সংঘবদ্ধ হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হামলা চালিয়ে জানালা ভাংচুর ও ত্রাস সৃষ্টি করে। ওইদিনই নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফকরুদ্দীন আহমেদ এ ঘটনায় ১৭জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা করে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ১৭ আইনজীবীর মধ্যে ১৫জন আইনজীবীর প্রত্যেককে দুই বছর ছয় মাসের কারাদ- ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদ-ের আদেশ দেন। এছাড়া বাকি দুইজনকে খালাস দেন।
তিনি আরও জানান, মামলার রায় ঘোষণার পরপরই সাজাপ্রাপ্ত আইনজীবীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন। পরে জেলা ও দায়রা জজ জোয়াদ্দ্র্ার আমিরুল ইসলাম আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তাদের প্রত্যেকের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, বিচার প্রার্থীদের হয়রানী, আইনজীবীদের সাথে দুর্ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিচারক মো. ফকরুদ্দিনের অপসারণের দাবিতে ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসের প্রথমদিকে জেলা আইনজীবী সমিতি আদালত বর্জন, প্রতীকি অনশন, প্রতিবাদ সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। একপর্যায়ে ১৮ নভেম্বর উক্ত আইনজীবীরা সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনালের জানালা ভাংচুর করেন। এরপর তৎকালীন ওই আদালতের বিচরক মো. ফকরুদ্দিন বাদি হয়ে উক্ত ১৭ আইনজীবীর বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট