বিদেশের খবর: ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হুমকি দিয়ে বলেছেন, প্রত্যেক অনুপ্রবেশকারীকে তাড়ানো হবে। গতকাল আসামের গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত নর্থ-ইস্ট কাউন্সিলের ৬৮তম প্লেনারি সেশনে যোগ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে ৩৭০ ধারার বিলুপ্তি ঘটিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করলেও ৩৭১ ধারায় হাত পড়বে না। বিজেপি কোনদিন এতে স্পর্শ করবে না।
এদিকে আসামে আটককেন্দ্র তৈরি করছেন এনআরসি থেকে বাদ পড়া মানুষ। অন্যদিকে মুম্বাইয়েও আটককেন্দ্র করা হচ্ছে। শিবসেনার অভিযোগ, এখানে অবৈধ বাংলাদেশিদের বসবাস রয়েছে।
অমিত শাহ বলেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নরকম প্রশ্ন তুলেছেন। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ভারত সরকার একজন অনুপ্রবেশকারীকেও এদেশে থাকতে দেবে না। এটা আমাদের প্রতিশ্রুতি। জম্মু-কাশ্মীরের মতো উত্তর-পূর্বেও পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, পার্লামেন্টে আমি স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, এটা হবে না এবং আমি উত্তর-পূর্বের ৮ মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিতিতে আজ আবারো বলছি, ৩৭১ ধারায় হাত দেবে না সরকার। ৩৭০ ধারার মতো ৩৭১ ধারায়ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
৩৭১ বি ধারায় আসামের জন্য কয়েকটি বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এই ধারায় আসামের উপজাতি সম্প্রদায়গুলোর স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আসামে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর গতকাল প্রথম আসামে যান অমিত শাহ।
আসামে হচ্ছে গণআটককেন্দ্র: আসামে কথিত অবৈধ অভিবাসীদের জন্য নির্মাণাধীন আটক কেন্দ্রের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের একটা বড় অংশই বাদ পড়েছেন এনআরসি তালিকা থেকে। শ্রমিকরা জানেন, নিজেদের জন্যই তারা আটককেন্দ্র বানাচ্ছেন। জীবিকার স্বার্থে এই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আসামের গোয়ালপাড়া শহরের কাছে নদী তীরবর্তী দুর্গম এক এলাকায় ভারতে প্রথমবারের মতো গণআটক কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘন জঙ্গল কেটে প্রায় সাতটি ফুটবল মাঠের সমান জমি প্রস্তুত করে অবৈধ অধিবাসীদের জন্য ভবনগুলো নির্মিত হচ্ছে।
মুম্বাইয়েও আটককেন্দ্র হচ্ছে: অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের জন্য আটককেন্দ্র তৈরির জন্য জমি চেয়ে নবি মুম্বাই পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দফতর। তবে দফতর কোন চিঠি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। যদিও চলতি বছরের গোড়ার দিকে কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী, দেশের যে সমস্ত এলাকায় বেশি অনুপ্রবেশকারীর বাস, সেখানে আটককেন্দ্র করতে হবে। মহারাষ্ট্রে তৈরি হতে পারে আটককেন্দ্র।
মুম্বাইয়ে অবৈধ বাংলাদেশিদের বসবাস করা এবং কাজ করার অভিযোগ তুলেছে শিবসেনা। গত সপ্তাহে বার্তা সংস্থা এএনআইকে শিবসেনা নেতা অরবিন্দ সাওয়ান্ত বলেন, এলাকার প্রকৃত নাগরিকদের সমস্যার সমাধানে আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির প্রয়োজন ছিল। আমরা বাংলাদেশিদের তাড়াতে মুম্বাইয়েও একই পদক্ষেপ চাই।-এনডিটিভি