ভিন্ন স্বাদের খবর: দীর্ঘদিন ধরেই আখাউড়া রেলওয়ে শ্রমিক লীগ অফিসে জমতো জুয়ার আসর। শ্রমিক লীগ সাইনবোর্ডের আড়ালে এটি পরিণত হয়েছিল জুয়ার আখড়ায়। ওই আস্তনায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে আখাউড়া রেলওয়ে শ্রমিক লীগের অফিসে অভিযান চালিয়ে ১৬ জুয়াড়িকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
শ্রমিক লীগের সাইনবোর্ড থাকায় আখাউড়া রেলওয়ে থানা থেকে মাত্র ১০ গজ দূরে জুয়াড়িদের এ আস্তানা এতোদিন সুরক্ষিত বলে মনে করা হতো। অভিযোগ আছে জুয়ার আসর থেকে প্রাপ্ত আয়ের একটি অংশ থানায় পৌছে দেওয়া হতো, বিনিময়ে নিবিঘ্নে চব্বিশ ঘণ্টা চলতো জুয়া খেলা।
আইনমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আনিসুল হকের বিশেষ নির্দেশনার পরই আকস্মিক অভিযান বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। অভিযানে জুয়া খেলার সরঞ্জামাদি ও নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আখাউড়া রেলওয়ে থানা সংলগ্ন রেলওয়ে ক্লাব ও রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কার্যালয়ে নিয়মিতই জুয়ার আসর বসে। রেলওয়ে ক্লাবেই ছিল বড় জুয়ার আসর। যেখানে এলাকার পাশাপাশি দূর-দুরান্ত থেকে জুয়াড়িরা আসতেন। প্রধানমন্ত্রীর কঠোর অবস্থান ও সারাদেশে অভিযানের কারণে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রেলওয়ে ক্লাবটির জুয়া। তার পাশেই শ্রমিক লীগ অফিসের আড়ালে চলছিল পুরনো কারবার। বুধবার রাত আটটার দিকে আখাউড়া থানা পুলিশ সেটি ঘিরে ফেলে তল্লাশি চালায়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের আব্দুর রহমান (৪০), হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ উপজেলার রহিজ উদ্দিন (৪০), আখাউড়া দেবগ্রামের শেখ কাজল (৩৫), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কোড্ডার মো. হুমায়ুন কবির (৪৫), বাবুল ভূইয়া (৫০), জাহাঙ্গীর খলিফা (৫০), আইয়ুব মিয়া (৫৫), সুশেন খলিফা (৫০), চান্দির শফিকুল ইসলাম (৫৫), শ্যামনগরের নির্মল দাস (৩২), সজিব দাস (৩০), খলিলুর রহমান (৫০), ফেণী দাগনভূইয়ার মো. শাহ আলম (৫০), আখাউড়া কুমারপাড়া কলোনীর কাউছার আলী (৫০), অরুণ চন্দ্র দাস (৪২) ও রেলওয়ে কলোনীর নজরুল ইসলাম (৫৭)।
জুয়ার এই আসর থেকে নগদ ২৪ হাজার ৪১০ টাকা আর বেশ কিছু টোকেন উদ্ধার করে পুলিশ।
আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, জুয়ার আসর বিষয়ে খবর পাওয়া মাত্রই অভিযান চালানোর জন্য আইনমন্ত্রী পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি এটাও বলে দিয়েছেন যেন এ নিয়ে কেউ তদবির না করেন।’
আখাউড়া থানার ওসি মো. রসুল আহমেদ নিজামী ও পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরিফুল আমীন জানান, শ্রমিক লীগের অফিসটিতে নিয়মিত জুয়ার আসর বসতো বলে অভিযোগ রয়েছে। সে মোতাবেক তথ্য পেয়ে অভিযান চলে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।