ন্যাশনাল ডেস্ক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুদকের গণশুনানিতে জনগণের কাছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যক্ষভাবে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। এর মাধ্যমে জনগণই যে রাষ্ট্রের মালিক, সেটা প্রত্যক্ষভাবে অনুধাবন করা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা সেবাগ্রহীতা নাগরিকদের “স্যার” সম্বোধন করবেন।’
আজ বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ফ্রাঙ্ক করটোডার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুই সংস্থার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নিজ নিজ কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে সরকারি পরিষেবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আরও বাড়াতে কমিশন দেশব্যাপী গণশুনানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেবাগ্রহীতা নাগরিকদের মধ্যে একটি মিথস্ক্রিয়া যেমন হচ্ছে, তেমনি সরকারি কর্মকর্তারাও তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে আরও সচেতন হচ্ছেন।
এ সময় অক্সফাম প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বলেন, তাঁরাও তৃণমূল পর্যায়ে, বিশেষ করে ত্রাণ, নদীভাঙন, পরিবেশসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গণশুনানি করে থাকেন। এসব গণশুনানির মাধ্যমে তাঁরা দুর্নীতির অনেক তথ্য পান। এ–জাতীয় তথ্য দুদক গ্রহণ করলে তারা সরবরাহ করতে পারে, যা প্রান্তিক পর্যায়ে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
এ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কীভাবে কমিশন ও অক্সফাম যৌথভাবে কাজ করতে পারে, প্রথমে এর একটি কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হবে। এই কর্মকৌশলের মাধ্যমে যৌথভাবে সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এই কর্মকৌশল আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রণয়নের জন্য দুদকের মহাপরিচালককে (প্রতিরোধ) কমিশনের পক্ষে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর নেতৃত্বে একটি দল এবং অক্সফামের একটি দল যৌথভাবে এই কর্মকৌশল প্রণয়ন করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, দুদক ও অক্সফাম যৌথ অংশীদারত্বে দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে কার্যকর ও দৃশ্যমান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারে, যাতে জনগণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চকিত কণ্ঠে প্রতিবাদ করতে পারে। জনগণের দুর্নীতিবিরোধী তীব্র আকাঙ্ক্ষাই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে।
দেশের ২৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অক্সফাম বাংলাদেশের অংশীদারত্বের প্রশংসা করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘দুদকের এই কর্মপ্রক্রিয়ায় অক্সফামের অংশগ্রহণে আমরা খুশি। কমিশন এ–জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সততা ও নৈতিক মূল্যবোধ প্রোথিত করার চেষ্টা করছে।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদকের প্রশিক্ষণ ও আইসিটি অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল, অক্সফামের এদেশীয় পরিচালক দীপঙ্কর দত্ত, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মাহফুজা আক্তার, সিনিয়র ইনফ্লুয়েনসিং অফিসার মেহবুবা ইয়াসমিন প্রমুখ।