দেশের খবর: আদালতের নির্দেশের পরেও সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি কীভাবে চলছে তা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও পুলিশকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এসময় আদালত বলেন, ফিটনেস নবায়ন না করা কোনও গাড়ি সড়কে চলতে পারবে না। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিআরটিএকে এ বিষয়ে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ফিটনেস বিহীন পরিবহনের বিষয়ে বিআরটিএ একটি প্রতিবেদন দাখিলের পর বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
আদালতে বিআরটিএ’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রাফিউল ইসলাম। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।
বিআরটিএ’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ফিটনেসবিহীন প্রায় ৫ লাখ গাড়ি ছিল। ওইদিন আদালত আদেশ দেন- ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়িকে পেট্রোল পাম্প থেকে জ্বালানি না দিতে। এ আদেশ অনুসারে বিআরটিএ ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রত্যেক পেট্রোল পাম্পকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এ বিষয়ে ব্যানার লাগিয়েছে এবং ফিটনেসবিহীন গাড়িকে জ্বালানি দিচ্ছে না।’
প্রতিবেদনে গত ২৩ অক্টোবর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ গাড়ির মধ্যে সারাদেশে এক লাখ ৬৫ হাজার ৭৬৪ গাড়ি তাদের ফিটনেস নবায়ন করেছে বলে জানানো হয়।
এরআগে, গত ২৩ জুলাই এক আদেশে ঢাকাসহ সারাদেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়িগুলো দু’মাসের মধ্যে ফিটনেস নবায়ন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ৭১ হাজার ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এসব আদেশ দেন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। এসময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিনের বক্তব্য জানতে চান আদালত। এছাড়াও আদালতে দায়িত্বরত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক মামলার বিষয়ে মতামত দেন।
পরে ফিটনেসবিহীন ও নিবন্ধনহীন যান চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া যান চালানো রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার সম্বলিত সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদের চেতনা বাস্তবায়নে মোটরযান অধ্যাদেশ-১৯৮৩ সহ সংশ্লিষ্ট সব আইন কঠোরভাবে মেনে চলতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের আইজি, বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ সাত জনকে এসব রুলের জবাব দিতে বলা হয়।