ন্যাশনাল ডেস্ক: নীলফামারীর জলঢাকায় একই কলেজে দুই সভাপতি ও দুই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব পালনের খবর পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে ওই এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে উপজেলার মীরগঞ্জ হাট ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ে পাঠদানসহ বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের পহেলা অক্টোবর সাবেক অধ্যক্ষ বজলার রহমান বজু পদত্যাগ করে নিজেই পরিচালনা কমিটির সভাপতি হয়ে চাকরি বিধি বহির্ভূতভাবে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ১২তম শিক্ষক আবুজার রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষে দায়িত্ব প্রদান করেন। এ নিয়ে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক আবদুস ছাত্তার।
অপরদিকে গত ২৯ জানুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বারক নং ০৭ (র-১০২৩) জাতীঃ বিঃ/কঃপঃ/কোড-৩১২১/৪৬৯৬১ পত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের পক্ষে ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক ড. মো. মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত গভর্নিং বডির সভাপতি বজলুর রহমানকে অব্যাহতি দিয়ে আফজালুল হককে সভাপতি মনোনিত করে একটি পত্র প্রেরণ করেন। সেই পত্রের আলোকে আফজালুল হক গত ৫ ফেব্রুয়ারি গভর্নিং বডির সভা করে আবুজার রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিধি মোতাবেক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আবদুস ছাত্তারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করেন।
বর্তমান কমিটির সভাপতি আফজালুল হক আবদুস সাত্তারকে দায়িত্ব প্রদান করলেও আবুজার রহমান দায়িত্ব প্রদান না করে বহাল তবিয়তে সে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এমনকি আবুজার রহমান তার অনুপস্থিতিতে অধ্যক্ষের কক্ষ তালাবদ্ধ করে রেখে যান বলে অভিযোগ করেছেন ওই কলেজের একাধিক শিক্ষক। এতে করে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকরা।
বিধি মোতাবেক দায়িত্ব প্রাপ্তির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে প্রভাষক (ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) আবুজার রহমান বলেন, ‘কমিটি আমাকে দায়িত্ব দেয়ার পর আমি হাইকোর্টে রিট করেছি এবং সেই রিটের আদেশের বলে দায়িত্ব পালন করছি। রিটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অন্য কাউকে দায়িত্ব দেয়া ঠিক হয়নি।’
অপর দিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুস সাত্তার বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পত্রের আলোকে গভর্নিং বডির সভাপতি কমিটির সভা করে আমাকে বিধি অনুযায়ী দায়িত্ব প্রদান করেছেন। কিন্তু আবুজার রহমান জোর করে দায়িত্ব পালন করছেন।’
এ বিষয়ে ওই কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং বর্তমান সভাপতি দাবিদার বজলার রহমান বজু বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে সভাপতি হিসেবে পত্র দিয়েছে সেই আলোকে আমি দায়িত্ব পালন করছি। জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।’
কলেজের সভাপতি আফজালুল হক বলেন, ‘আমার কমিটির মেয়াদ ২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত ছিল, আমাকে অবৈধভাবে সরানো হয়েছিল। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আবেদন করে পুনরায় সভাপতি পদটি ফেরত পেয়েছি এবং কমিটির সভা করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে আবদুস সাত্তারকে দায়িত্ব দিয়েছি।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, ‘কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এখানে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কোনো করনীয় নেই।’তবে বিষয়টি অবগত আছি।