শ্যামনগর প্রতিনিধি:
“আম্পানে আস্থা; আস্থায় বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্যের আলোকে আস্থা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঘুর্নিঝড় আম্পান বিধ্বস্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ঘুর্নিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহযোগিতা, পানিবন্দী মানুষদের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, ফ্রি ঔষুধ বিতরণ, বানভাসি মানুষের জন্য রান্না করা খাবার সরবরাহ, বিশুদ্ধ পানি বিতরণ সহ নানাবিধ কার্যক্রম নিয়ে দুর্যোগ কবলিত মানুষের পাশে দাড়িয়েছে আস্থা ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থা।
সংঘঠনটির অন্যতম উদ্যোক্তা মোঃ নাজমুল হুদা রুবেল বলেন, প্রথম থেকেই আমাদের চেষ্টা ছিলো সমাজের একেবারে অভাবী যে লোকটা তাকে খুজে বের করে তার ঘরে সাহায্য পৌছানো। এ জন্য আমাদের সেচ্ছাসেবীদের অন্যদের চেয়ে একটু বেশি কষ্ট করতে হয়। আমাদের একটা টিম যে এলাকায় আমরা কার্ক্রম চালাবো সেখানে আগের রাত থেকেই প্রস্তুতি নেয়, ঘরে ঘরে গিয়ে খুজে বের করে কার ঘরে পরের দিন চলার মতোও খাবার নেই। পরবর্তীতে শুধুমাত্র অসহায় সেইসব পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌছায়ে দেয়।
তিনি আরও জানান,
আমাদের সীমিত তহবিলের মধ্যে আমরা যাতে সবচেয়ে অসহায় মানুষটিকে সাহায্য করতে পারি সে চেষ্টাই আমরা করে যাচ্ছি।
আমাদের “আম্পানে আস্থা” এই ইভেন্টের মাধ্যমে সুপার সাইক্লোন আম্পান যাদের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে, তারপরও তারা বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে এরকম মানুষদের তাদের স্বপ্ন পূরণের কিছুটা অংশীদার আমরা হতে চেয়েছি। সুপেয় পানির প্রকট সংকট এলাকায় মানুষের বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে যে আহাজারি তা যতটা সম্ভব আমরা আমাদের সাধ্যমত পূরণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি
বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে লন্ডভন্ড দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সুন্দরবন উপকূলবর্তী জেলা সাতক্ষীরায় “আম্পানে আস্থা” নামের ইভেন্টের মাধ্যমে আমরা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। সেখানে আমাদের শ্যামনগর শাখার প্রধান রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে আমাদের আস্থা ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবীরা দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে যতটা সম্ভব ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের কষ্ট লাঘব করা যায়।
আস্থা ফাউন্ডেশনের শ্যামনগর শাখার প্রধান রবিউল ইসলাম জানান, “আম্পানে আস্থা ” ইভেন্টের মাধ্যমে আমরা ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাড়িয়েছি। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীতে সুপেয় পানির তীব্র সংকট মোকাবিলায় নিয়মিত বিশুদ্ধ খাবার পানি বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ইতিপূর্বেই আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। ঘুর্নিঝড় পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্থ ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের কে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্ত সকল ব্যক্তিদের মাঝে বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ করা হয়েছে আস্থা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে। এছাড়াও এই ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অনাহারে – অর্ধাহারে দিন কাটানো অসহায় ব্যক্তিদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
কাশিমাড়ীর ঘোলা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরে আজ পর্যন্ত আমাদের কেউ কিছু দেয়নি এবং খোজও নেয়নি। আস্থা ফাউন্ডেশন আমাদের খাবার পানি দিচ্ছে, ডাক্তার দেখিয়ে আবার ওষুধও দিয়েছে। না খেয়ে থাকলে রান্না করে আমাদের মুখেও খাবারও তুলে দিয়েছে। আমরা আস্থা ফাউন্ডেশনের নিকট কৃতজ্ঞ থাকব।
একই কথা বলেন, কাশিমাড়ী আশ্রয়ন কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ঘূর্ণিঝড়ে স্বয়-সম্বল হারানো জোবেদা বেগমও। তিনি বলেন আস্থা ফাউন্ডেশন আমাদের খোজ খবর নিচ্ছে, খাবার দিচ্ছে, পানি দিচ্ছে, ওষুধও দিচ্ছে। আমরা আস্থা ফাউন্ডেশনকে সব সময় পাশে চাই।
শ্যামনগর শাখার প্রধান রবিউল ইসলাম আরও জানান, উপকূলীয় এই এলাকায় আস্থা ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম দেখে এই এলাকার অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা ইতিমধ্যে আস্থা ফাউন্ডেশনের নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। শ্যামনগরের শ্রেষ্ঠ যুব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সিডিও’ ইতিমধ্যে আস্থা ফাউন্ডেশনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের কার্যক্রম কে আরও গতিশীল এবং মানব কল্যাণে ব্যবহারে প্রসারিত করার জন্য সহযোগিতা করছে। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে আস্থা ফাউন্ডেশন তাদের নানামুখী কার্যাক্রম দ্বারা এলাকাবাসীর আস্থা অর্জনে সমর্থ হয়েছে।