এসএম বাচ্চু,তালা : পানের ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া ও শীতের প্রকোপ একটু কম না থাকায় এবার সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় পানের আবাদ ভালো হয়েছে। ৪২৫ হেক্টর জমিতে হয়েছে পান চাষ ।
তবে গতবছরে আম্পান ঝড়ের কারণে পানের বরজের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করায় পান চাষীরা লাভের মুখ দেখতে পারেনি তেমন। চাষি ও কৃষি বিভাগের ভাষ্য, এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পান চাষে ফলন বেশি হয়। উৎপাদন খরচ বেশি হলেও বছরের অধিকাংশ সময়ই দাম ভালো পাওয়া যায়। তাই অন্যান্য ফসল ছেড়ে চাষিরা পান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
সরজমিনে দেখা যায়,তালা উপজেলার প্রায় সব ক’টি ইউনিয়নে পান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে তালা, ইসলামকাটি, মাগুরা, ধানদিয়া সবচেয়ে বেশি পান চাষ হয়েছে। প্রত্যেক বরজে সারি সারি পানের লতা। প্রতিটি লতা দুইপাশে পান ভরে গেছে যা দেখে ভালোলাগায় মন জুড়িয়ে যাবে।
চাষিরা জানান পান গাছ লাগানোর ৬ মাস পর থেকেই ফলন পাওয়া যায়। আর একবার লাগানো পান গাছ থেকে প্রায় ২০/২৫ বছর পান পাতা সংগ্রহ করা যায়। ধান সহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় পান চাষে লাভের পরিমান অনেক বেশি। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় পানের ফলন ভালো হয়েছে। একই সংগে দাম ভাল থাকায় পান চাষিরা বেজায় খুশি।
তালা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের নিত্য নন্দী ও জালালপুর ইউনিয়নের অন্তু দাশ(রাখি) বলেন, প্রতি বছর ৫০ থেকে ১ লক্ষ টাকার পান বিক্রি করা যায়। এবছর পানের আবাদ খুব ভালো হয়েছে। এক বিঘা পান চাষ করতে প্রায় এক লক্ষ টাকার বেশি খরচ হয়। একবার খরচ করলে বরজ থেকে ২০/২৫ বছর পান সংগ্রহ করা যায়। একপন পান ২০০ থেকে ২২৫ দরে বিক্রি করেছেন তারা। স্বল্পসুদে ঋণ পেলে পান চাষ আরও বাড়ানো যেত বলেও জানান তারা। আমাদের উৎপাদিত পান ঢাকা ,খুলনা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। পান চাষ বেশ লাভ জনক কিন্তুআম্পানের কারণে পানের বরজ লন্ড ভন্ড হয়ে যাওয়ায় চাষীরা বেশ লোকসানে আছে।
হাটবাজারে ঘুরে দেখা যায়, বেচা-কেনা করতে কয়েক শতাধিক চাষি পান নিয়ে বাজারে বসেন। আর ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীদের কাছে পান বিক্রয় করেন।এখানে সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিন পান বিক্রয় হয়। তবে সপ্তাহে ২ দিন লাখ লাখ টাকার পান দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এ বছর তালায় ৪২৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। সরকারি সহায়তা ও স্বল্পসুদে ঋণ পেলে আগামীতে এ উপজেলায় পানের চাষ আরও বাড়বে।
পূর্ববর্তী পোস্ট