খেলার খবর: চেন্নাইয়ের পর মুম্বাই। মাঠ বদলেও ভাগ্যের চাকা ঘুরল না কলকাতার। খারাপ বোলিং এবং তার থেকেও খারাপ টপ অর্ডার ব্যাটিংই ডোবাল নাইটদের। আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ো অর্ধ-শতরান, কার্তিকের ৪০ রান এবং শেষদিকে কামিন্সের অপরাজিত ৬৬ রানের ইনিংস না থাকলে লজ্জার মুখে পড়তে হত কেকেআরকে।
কলকাতার একাদশে সাকিবের পরিবর্তে সুনীল নারিনকে স্থান দেয়া হয় গতকাল।
চেন্নাইয়ের দেওয়া ২২১ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরুতেই পাঁচ উইকেট খুইয়ে ছিল নাইটরা। তবে এই তিন ব্যাটসম্যান দলকে লড়াই রেখেছিল। তবে শেষপর্যন্ত অবশ্য জয় পেল চেন্নাই। ১৯.১ ওভারে ২০২ রানে অলআউট হয়ে গেলেন মর্গ্যানরা।
গতকাল বুধবার (২১ এপ্রিল) টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নাইট অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান। কিন্তু কেকেআর অধিনায়কের সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ওপেনিং জুটিতে চেন্নাইয়ের ঋতুরাজ গায়কোয়াড এবং ফাফ ডু প্লেসি যোগ করেন ১১৫ রান। তাও আবার মাত্র ১২.২ ওভারে। ৪২ বলে ৬৪ রান করেন ঋতুরাজ। মারেন ৬টি চার ও ৪টি ছয়। এই সময় কোনও নাইট বোলারই দলকে উইকেট এনে দিতে পারেননি। এমনকি সাকিব আল হাসানের বদলে সুযোগ পাওয়া নারিনও দলকে এই সময় সাফল্য এনে দিতে ব্যর্থ হন। শেষপর্যন্ত ঋতুরাজকে আউট করে এই জুটি ভাঙেন বরুণ। এরপর মঈন আলি করেন ১২ বলে ২৫ রান।
চার নম্বরে চেন্নাই অধিনায়ক ধোনির সংগ্রহ ৮ বলে ১৭ রান। এই ম্যাচে টুর্নামেন্টের নিজের প্রথম ছয়টিও মারেন সাবেক ভারত অধিনায়ক। যা নিয়ে আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় ধোনি ভক্তদের। মাত্র ৬০ বলে ৯৫ রানের ইনিংস খেলেন ডু প্লেসি। অল্পের জন্য শতরান না পেলেও শেষপর্যন্ত অপরাজিত থাকেন এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। মারেন ৯টি চার ও ৪টি ছয়। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে চেন্নাইয়ের রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২২০ রান। কেকেআর বোলারদের মধ্যে একটি করে উইকেট পান বরুণ, নারিন এবং রাসেল।
২২১ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধস নামে নাইট ব্যাটিং লাইনআপে। ৫.২ ওভারে মাত্র ৩১ রানে পাঁচ উইকেট হারায় কলকাতা। গিল (০), রানা (৯), ত্রিপাঠি (৮), মর্গ্যান (৭) এবং নারিন (৪) প্রত্যেকেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন। পাঁচটির মধ্যে চারটি উইকেটই তুলে নেন দীপক চাহার। একটি পান লুঙ্গি এনগিডি। এই সময় উইকেটকিপার হিসেবে আইপিএলে ১৫০টি আউট করার রেকর্ডও গড়েন ধোনি। তবে দ্রুত পাঁচ উইকেট পড়লেও এরপর রাসেল-কার্তিক জুটি কেকেআরকে ফের খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন।
কমে যাওয়া রানরেট বাড়াতে বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাটিং করতে থাকেন রাসেল। অবশ্য দিল্লি যেন সত্যিই বহুদূরেই ছিল। শেষপর্যন্ত অবশ্য ২২ বলে ৫৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে স্যাম ক্যারানের বলে বোল্ড হন ক্যারিবিয়ান তারকা। মারেন ৩টি চার এবং ৬টি ছয়। এর কিছু পরে আউট হয়ে যান দীনেশ কার্তিকও। তাঁর সংগ্রহ ২৪ বলে ৪০ রান।
শেষদিকে কামিন্স (৩৪ বলে ৬৬ রান) মরণপণ চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি,ক্যারানের এক ওভার থেকে ৩০ রানও তোলেন। শুধু তাই নয়, ২৩ বলে নিজের অর্ধ-শতরানও পূর্ণ করেন তিনি। তবে তা মোটেই যথেষ্ট ছিল না। কারণ খারাপ শটে আউট হয়ে দলের অধিকাংশ ব্যাটসম্যান ততক্ষণে সাজঘরে। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারের আগেই ২০২ রানে গুটিয়ে যায় নাইটদের ইনিংস। ১৮ রানে ম্যাচটি হারে কলকাতা। ফলে আরও খানিকটা বিপাকে পড়ল শাহরুখ খানের দল।