বিদেশের খবর: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উৎসব নবরাত্রি উপলক্ষ্যে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মাংসের দোকান আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই গত দুদিন ধরে মাংসের দোকান বন্ধ থাকার পর এ নিয়ে সেখানে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
দিল্লির দক্ষিণ এবং পূর্বাঞ্চলীয় জেলার মেয়ররা বলেছেন, এই উৎসবের সময় বেশিরভাগ মানুষ আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, উন্মুক্ত স্থানে মাংস কাটা তারা পছন্দ করেন না।
তবে মাংসের দোকান বন্ধ করে দেওয়ায় অনেকে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই বলছেন, এটি ভারতের বহুত্ববাদের লঙ্ঘন। খবর বিবিসির।
নবরাত্রিতে মহিষাসুরের ওপর দেবী দুর্গার বিজয় উদযাপন করা হয়। ৯ দিনের উৎসবের সময় হিন্দুরা সাধারণত উপবাস করেন অথবা মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। এমনকি তাদের খাবারে রসুন, পেঁয়াজ এবং নির্দিষ্ট মশলাও ব্যবহার করা হয় না।
ভারতের রাজধানীর ক্ষমতায় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। তবে কেজরিওয়ালের দলের কোনো কর্মকর্তা দিল্লিতে মাংসের দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেননি। আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দিল্লির সব মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সমর্থিত মেয়ররা।
বিজেপিদলীয় মেয়রদের এই পদক্ষেপ ঘিরে অনলাইনে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, কাউকে মাংস খাওয়া থেকে বিরত রাখা অথবা মাংসকে কেন্দ্র করে অন্যের জীবিকা উপার্জনের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করা উচিত নয়।
দিল্লির মাংসের দোকান বন্ধের নির্দেশের তীব্র সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী ও সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র। তিনি বলেন, সংবিধান আমাকে যখন খুশি মাংস খাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
জম্মু এবং কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ দোকান বন্ধের নির্দেশের সমালোচনা করে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন ‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকার প্রত্যেক অমুসলিম বাসিন্দা অথবা পর্যটককে রোজার মাসে জনসমক্ষে খেতে বারণ করা ঠিক কি না?’
তবে একই সময়ে কেন পেঁয়াজ এবং রসুনের ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়নি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ। তাদের প্রশ্ন, ‘কেন শুধু মাংসের দোকান বন্ধ?’