দুই দশক আগে আইসিসি ট্রফি জয়ের কথা হয়তো এ প্রজন্মের অনেকের মনে নেই। ১৯৯৭ সালে আইসিসির সহযোগী সদস্যের নিয়ে আয়োজিত ওই টুর্নামেন্টের টানটান উত্তেজনার ফাইনালে বাংলাদেশ হারিয়ে দিয়েছিল কেনিয়াকে। দুই বছর পর বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর উচ্ছ্বাসে ভেসেছিল বাংলাদেশের মানুষ। সেই শুরু। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে টাইগাররা আজ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে। অনেক সাফল্যেই ভেসেছে বাংলাদেশ, তবে এই দিন আসেনি কখনও। এই প্রথম যে আইসিসির বড় কোনও টুর্নামেন্টের শেষ চারে উঠল টাইগাররা। আনন্দের জোয়ারে ভাসছে তাই গোটা বাংলাদেশ।
২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া বাংলাদেশকে পেরোতে হয়েছে অনেক কঠিন পথ। সাফল্য যেমন পেয়েছে, তেমনি ব্যর্থতার গ্লানিতেও ডু্বেছে অনেকবার। ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকেই আসলে টাইগারদের পরিবর্তনের সূচনা। ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া দলটি আজ অনেক পরিণত। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিই তার প্রমাণ।
ওই বিশ্বকাপের পর পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে টানা তিনটি ওয়ানডে সিরিজে হারিয়ে ক্রিকেট-দুনিয়াকে চমকে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই সাফল্যেই র্যাংকিংয়ে অভাবনীয় উন্নতি এনে দিয়েছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সুযোগ। র্যাংকিংয়ের সেরা আট দলের লড়াইয়ে টাইগাররা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই সেমিফাইনালে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব-মাহমুদউল্লাহর অসাধারণ ব্যাটিংয়ে শেষ চারের পথ প্রশস্ত হয়েছিল। তবু দুশ্চিন্তা ছিল, যদি অস্ট্রেলিয়া হেরে যায় ইংল্যান্ডের কাছে। কিন্তু তা হয় নি। ইংল্যান্ডের কাছে হেরে অস্ট্রেলিয়ার বিদায়ে বাংলাদেশের মানুষ আজ উল্লাসে মুখর, আনন্দে আত্মহারা।
এখন সামনে সেমিফাইনালের চ্যালেঞ্জ। আগামী বৃহস্পতিবার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কারা হবে প্রতিপক্ষ, তা জানতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। তবে যে-ই প্রতিপক্ষ হোক, বাংলাদেশ যে আজ নির্ভীক, তা কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে রচিত হয়েছে আরেকবার। এবার আরও এগিয়ে যাওয়ার পালা।