নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় সংগীতকে বেদাত ঘোষণা করা সাতক্ষীলা সদর উপজেলার বাঁশদহা আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী দাখিল মাদ্রাসার মৌলভী আবু তাহের জিয়াউদ্দীন মোঃ ইউসুফকে গ্রেফতার করেছে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ। রবিবার দুপুর ১টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের রুপালী ব্যাংকের নিকট হতে তাকে গ্রেফতার করে সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক বোরহান মিয়া। মৌলভী আবু তাহেরের গ্রামের বাড়ি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার গৌরীঘোনা গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল বারী ওয়াদুদী।
বাঁশদহা আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার রিয়াজুল ইসলাম বলেন, মৌলভী আবু তাহের ২০১০ সালে মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকে স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করে। সে নিজে যেটা ভাল বুঝতো সেটাই করতো। ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার দৈনিক সমাবেশে মৌলভী আবু তাহেরকে জাতীয় সংগীত গাইতে বলা হলে তিনি জাতীয় সংগীত না গেয়ে বলেন, আমি জামায়াত করি, দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেই, জাতীয় সংগীত গাওয়া বেদাত সুতরাং আমি জাতীয় সংগীত গাইতে পারবো না।
একপর্যায়ে এ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক/কর্মচারী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এরপর তিনি মাদরাসা হতে চলে যান। গত দুই বছর ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তাকে মাদরাসায় হাজীর হওয়ার জন্য একাধিকবার নোটিশ করা হয়। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর চূড়ান্ত কারণ দর্শনোসহ মাদরাসায় হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু তিনি হাজির হননি। ফলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ২০১৬ সালের ১৮ আগস্ট সাতক্ষীরার জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থায় নিখোঁজের একটি আবেদন করেন। এছাড়াও ২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারী তারিখে দৈনিক খবরপত্র, ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারী তারিখে দৈনিক কাফেলা, ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট তারিখে দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকায় মাদরাসা শিক্ষক নিখোঁজ শিরোনামে বিঞ্জপ্তি প্রকাশ করে। নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশ করায় তিনি কয়েকটি প্রত্রিকার সম্পাদকের নামে মামলা করেন। এরপর ২০১৬ সালের ০২ নভেম্বর তারিখে দৈনিক জনকণ্ঠে’ রাজাকার পুত্র ইউসুফের খুঁটির জোর কোথায়’ শিরোনামে সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করে। সেখানে ১৯৭১ সালে তাহেরের পিতা রাজাকার আব্দুল বারীর কাহিনি বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। মাদ্রাসায় যোগদানের পর হতে আবু তাহেরের চলাফেরা সন্দেহজনক ছিল। তার ১৫/১৬ টির মত মোবাইলের সিম আছে। তাছাড়াও তিনি মাদরাসায় থাকাকালীন সময়ে জামায়াতের রাজনীতি করতেন। এছাড়া তার কাছে জমায়াত, বিএনপি, আওয়ামীলীগসহ কয়েকটি দলের প্রত্যয়ন পত্র থাকতো। এতো অপকর্ম সত্ত্বেও আবু তাহের বাঁশদহা মাদরাসার শিক্ষক/কর্মচারী ও ম্যানেজিং কমিটির নামে একাধিক মামলা করেছেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মারুফ আহম্মেদ বলেন, মৌলভী আবু তাহের সি,আর-৬৮৬/১৩ মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপ-পরিদর্শক বোরহান মিয়া সাতক্ষীরার রুপালী ব্যাংকের নিকট হতে তাকে গ্রেফতার করেন। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট