পৃথিবীর যে কোনও অমানবিক কিংবা অন্যায় ইস্যুতে সুমনের কলম ও কণ্ঠ বরাবরই যোদ্ধার ভূমিকা পালন করে। তার পাঠক শ্রোতারাও তেমনটাই প্রত্যাশা করেন। ‘রোহিঙ্গা’ ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই চলছে প্রতিবাদ। সেই মিছিলে এবার গানের মাধ্যমে সামিল হলেন কলকাতার কবীর সুমনও।
আজ, ১২ অক্টোবর ঘণ্টাচারেক আগে তিনি তার ফেসবুক ফ্যানপেজ ও সাউন্ডক্লাউডে একটি নতুন গান প্রকাশ করেন। সঙ্গে দেন ‘রোহিঙ্গা’ নামের গানটি তৈরির একটি ফুটনোট। যেখানে তিনি শুরুতেই জানিয়েছেন গানটির রেকর্ডিং খারাপ ও তার শরীর ভালো নয়-এর খবর। তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের একাধিক বন্ধু আমার কাছে এমন একটি গান চেয়েছিলেন তাই একটি গান তৈরি করে ঘরে রেকর্ড করলাম। মাইক্রোফোনে হাওয়ার আওয়াজ এসেছে। আমার শরীর ভালো নয়। গরমে রেকর্ড করা আর সম্ভব নয়। এই রচনা ও রেকর্ডিং এর ধ্বনিবৈশিষ্ট ও ধ্বনি-উৎকর্ষের চেয়ে রচনাটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
ফুটনোটের শেষ অংশে তিনি অনুরোধ করে বলেন, ‘আমাকে যদি কেউ সত্যিই ভালবাসেন এই ধরনের গান আর করতে বলবেন না। খুব কষ্ট হয়। আমার জীবনের সেরা কাজ আমি এখন করে চলেছি- বাংলা ভাষায় বিভিন্ন রাগে বিলম্বিত ও মধ্য/দ্রুত লয়ে খেয়ালগান তৈরি। এটি ঐতিহাসিক কাজ যা আর কেউ এই পরিসরে, এই উৎকর্ষ বজায় রেখে, এই সংখ্যায় কোনওদিনই করেননি আধুনিক ও সমকালীন বাংলা ভাষায়। আমি জানি এ জন্য আমায় আমার জাতি সাধুবাদ দেবে না, বরং অন্য কিছু দেবে। তাতে আমার যায় আসে না। আমি বাঙালি জাতির জন্য কাজটি করছি না, বাংলা ভাষার জন্য করছি। সালাম।’
উপরের ফুটনোটের নিচে তিনি ‘রোহিঙ্গা’ শিরোনামের গানটি শেয়ার করেন। গানটির কথাগুলো এমন-
বর্মীবাহিনী নেমেছে মাঠে/ রোহিঙ্গা জানে কে গলা কাটে/ শান্তিপদ্মে কী-ভীষণ হুম/ রোহিঙ্গা জানে রাত্রি নিঝুম।
মিডিয়া-ছবিতে অস্ত্র হাতে/ গেরুয়াধারীরা অনেক রাতে/ রোহিঙ্গাদের নিধনে শান্তি/ বর্মীবাহিনী নধরকান্তি।
হাজার বছর আরাকানে বাস/ রোহিঙ্গাদের থ্যাঁতলানো লাশ/ রোহিঙ্গা মেয়ে গর্ভে লাথি/ ভ্রুণ হত্যার মসলাপাতি।
এ হলো মানুষ তীর্থফেরা/ সবার ওপরে সত্য এরা/ কারা রোহিঙ্গা কী যায় আসে/ বসছে শকুন শিশুর লাশে।
স্বাগত শকুন তোমারই যোগ্য/ আমরা মানুষ পোকার ভোগ্য/ উপড়নো চোখ তোমাকেই দেব/ শুনলে এ-গান রোহিঙ্গা ভেবো।