নিজস্ব প্রতিবেদক: জেল থেকে বেরিয়ে সদ্য দিনেই সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেসরার একটি ঘেরে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা আতাউর রহমান ও তার বাহিনী। এ সময় ঘেরে থাকা জমির মালিক পক্ষের চার নারীকে বেপরোয়া ভাবে মারধর করে ঘের দখল করে নিলেও পুলিশ তাদের হটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। আহতদের সাতক্ষীরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ আতাউর ও তার ক্যাডার বাহিনীকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে। তালা উপজেলার খেসরা ইউনিয়নের বিশ্বাসের চক ঘেরে সোমবার ভর দুপুরে এই হামলা চালায় জেল থেকে আজ জামিনে আসা কয়েক মামলার আসামি আতাউর ও তার বাহিনী। এদিকে ঘেরে হামলা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি আতাউর। আহতরা যাতে চিকিৎসা নিতে যেতে না পারে সেজন্য পথে ব্যারিকেড দেয় সে ও তার বাহিনী। পুলিশ এই ব্যারিকেডও সরিয়ে তাদের চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। আহত চার নারী লক্ষ্মী রানী গাইন, শিবানী গাইন, নমিতা গাইন ও সুলতা গাইনের মাথা ফেটে গেছে। তাদের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন ডাক্তার।জমির মালিক সত্যরঞ্জন গাইন জানান ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দখলে থাকা বিশ্বাসের চকে তাদের পৈত্রিক ৪৫ বিঘা জমিতে মাছের ঘের রয়েছে। তিনি জানান এই জমি জনৈক প্রবীর নিজের দাবি করলেও কোনো কাগজপত্র না থাকায় মামলায় সে বারবার হেরে যায়। খুলনার সেই প্রবীরের ভাড়াটিয়া হিসাবে স্থানীয় যুবলীগ নেতা আতাউর রহমান আগেও এই ঘেরে হামলা চালিয়েছিল। এ নিয়ে মামলা হলে আতাউর তার সহযোগি কাসেম ও আমিরুল জেল খাটে। তিনি জানান আজ সকাল থেকে তার পরিবারের নারী সদস্যদের সাথে নিয়ে তারা ঘেরে মাছ ধরছিলেন। এ সময় জামিনে বাড়ি এসেই আতাউর তার অপর সঙ্গী মুড়োগাছা গ্রামের মেহেদী হাসান বাবু, খাজো রবীন, সুরঞ্জন, মিলন, আবুল কাসেম ও আমিরুলসহ ৫০ থেকে ৬০ জন লোক লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ঘেরে হামলা করে। তাদের মার খেয়ে সুদর্শন গাইন, ফনীন্দ্র গাইন, সুজয় গাইন এবং তিনি নিজেসহ বাড়ির পুরুষ সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে ছুটে বেরিয়ে যান। এ সময় তারা হামলা করে নারী সদস্যদের ওপর। আহতরা জানান তাদেরকে মারধর করে অচেতন অবস্থায় ঘেরের মাঝে দুই ঘন্টা ফেলে রেখে আতাউর বাহিনী পাহারায় থাকে। খবর পেয়ে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছগির মিয়ার নির্দেশে খেসরা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাসানুর রহমান দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। তিনি হামলাকারী দখলদারদের হটিয়ে দেন। তিনি আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরায় পাঠানোর ব্যবস্থা করলেও আতাউর ও তার বাহিনী বাথুয়ারডাঙ্গায় রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। এস আই হাসানুর রহমান জানান তিনি ফের সেখানে যেয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করে আহতদের সাতক্ষীরায় চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছেন। এসআই হাসান আরও জানান ‘ আতাউর একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। সে আজ সোমবার জেল থেকে বেরিয়ে এসে এই হামলা চালিয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন আমরা এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছি। খেসরা ইউপি চেয়ারম্যান রাজীব হোসেন রাজু জানান, আমি তালায় মিটিংয়ে আছি। এ সম্পর্কে কিছুই জানিনা। যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আতাউরের ফোন বারবার বন্ধ পাওয়া গেছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট