জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সোয়া তিনটায় কারাগারে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনটিকে ‘সাবজেল’ ঘোষণা করে সেখানে রাখা হয় তাকে। বর্তমানে একজন নারী ও একজন পুরুষ ডেপুটি জেলার ও কয়েকজন নারী কারারক্ষী এই ‘সাবজেলে’ দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া, বাইরে রয়েছেন আরও শতাধিক কারারক্ষী। তারা সবাই খালেদা জিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
কারা সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া কারাগারে সুস্থ আছেন। তারপরও তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেহেরুন নেছা নামে একজন মহিলা নার্সকে সার্বক্ষণিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিকালে তিনি হালকা নাস্তা করলেও রাতে কারাগারের দেওয়া খাবার খেয়েছেন। সবজি, মাছ, মাংস ও ডালসহ সব ধরনের খাবারই তাকে দেওয়া হয়েছিল। তার পছন্দের খাবার পেপের জুসও দেওয়া হয়। এছাড়া, খালেদা জিয়া যে কক্ষে রয়েছেন সেখানে ডিস সংযোগ ও এসি লাগানো হয়েছে।
কারা সূত্র আরও জানায়, খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পরপরই ঘুমিয়েছেন।শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঘুম থেকে উঠে কয়েকটি পত্রিকা পড়েছেন। এরপর তাকে রুটি, সবজি, ডিম ও চা দেওয়া হয়। তিনি সেগুলো খেয়েছেন। দুপুরেও কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া খাবার খেয়েছেন খালেদা জিয়া। শুয়ে, বসে, পত্রিকা পড়ে ও কারারক্ষীদের সঙ্গে আলাপ করেই সময় কাটিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে খালেদা জিয়ার জন্য তার পছন্দের কিছু ফল নিয়ে জেল গেটে গিয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতার স্ত্রী। কিন্তু খালেদা জিয়ার পছন্দের সেই ফল পৌঁছেনি তার কাছে। জেল গেট থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাদের। দুপুরে আবারও ফল নিয়ে জেলগেটে যান বিএনপির তিন নেত্রী। তারা হলেন অ্যাডভোকেট আরিফা জেসমিন, নেত্রকোনা জেলা মহিলা দলের যুগ্মআহ্বায়ক রেহানা তালুকদার ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা। পুলিশ তাদেরও ফিরিয়ে দেয়।
শুক্রবার বিকাল তিনটার দিকে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়ার জন্য খাবার নিয়ে যান তার মেজো বোন সেলিমা রহমান ও ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার, শামীমের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ও ছেলে অভীক ইস্কান্দার। আধা ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে তারা একটি গাড়িতে করে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে তারা কারাগার এলাকা ত্যাগ করেন।
কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির কয়েদি বন্দি হিসেবে খালেদা জিয়া সব সুবিধা পাবেন। এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টা কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া সব খাবারই তিনি খেয়েছেন। তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। বিকালে খালেদা জিয়ার স্বজনরা তার সঙ্গে দেখা করে কিছু খাবার ও ফল দিয়ে গেছেন।