স্পোর্টস ডেস্ক: এক গ্যারেথ বেলই লিভারপুলকে তছনছ করে দিলেন। তারই জোড়া গোলে অলরেডদের ৩-১ গোলে হারিয়ে টানা তিন মৌসুম উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতলো স্প্যানিশ রয়্যাল রিয়াল মাদ্রিদ। এটি তাদের ১৩তম চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা।
এরফলে ব্যক্তিগত শিরোপার আধিক্যে এগিয়ে গেলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও। ক্যারিয়ারের ৫ম চ্যাম্পিয়ন লিগ জিতলেন এই পর্তুগিজ উইঙ্গার। এরআগে ২০০০৯ সালে ম্যানইউর হয়ে জেতার পর ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে রিয়ালের হয়ে আরও তিনটি শিরোপা জিতেছিন।
এরআগে শনিবার (২৬মে) কিয়েভে প্রথমার্ধের শুরু থেকে ঘরের মাঠের মতোই দাপুটে খেলা উপহার দিতে থাকে লিভারপুল। মুহুর্মুহু আক্রমনে কাঁপিয়ে তুলেছে রিয়ালের রক্ষণ। কিন্তু ফাঁটল ধরাতে পারেনি একবারও। তবে ২৪ মিনিটে প্রায় পেরেছিলো। জেমস মিলনারের এগিয়ে দেয়া বল ফার্মিনহো জালে শট নিলে তা ডিফেণ্ডারের গায়ে লেগে ফিরে যায়। ফিরে আসা বলটি আলেক্সান্ডার আর্নল্ড মাটি কামরানো শটে জালে পাঠাতে চাইলে তা ঝাঁপিয়ে পড়ে বাহুবন্দি করেন কেইলর নাভাস।
১৪ মিনিটে সুযোগ এসেছিলো রিয়াল শিবিরেও। টনি ক্রুসের বাড়ানো বল থেকে গোলবারের ডান দিক দিয়ে যেয়ে গতিময় শট নিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু বলটি গোলবারে কিছুটা উপর দিয়ে বল চলে গেলে এই যাত্রায় বেঁচে যায় ইয়র্গেন ক্লপের শিষ্যরা।
২৬ মিনিটে ম্যাচে নেমে আসে স্থবিরতা। রিয়াল ও লিভারপুলের স্কোর লাইন তখন ০-০। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে রিয়াল গোলবারের দিকে ছুটছিলেন সালাহ। তার পা থেকে বল নিতে সার্জিও রামোস তার ডান হাত ধরে একই সমান্তরালে ছুটলে এক সময় ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান এই নন্দিত লিভারপুল স্ট্রাইকার।
পড়ে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কাতরানোর পর ফিজিও এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে মাঠের বাইরে নিয়ে যান। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সান্তনা পেয়ে বহুদিনের বহুযত্নে লালিত স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান।
১০ মিনিট যেতে না যেতেই হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে পরে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান রিয়ালের রাইটব্যাক ড্যানি কারবাহাল।
প্রথমার্ধের একেবারে শেষে এগিয়ে যাওয়ার আরেকটি সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল। অলেরেডদের গোলবারের একেবারে সামনে থেকে রোনালদোর হেড থেকে করিম বেঞ্জেমা পোস্টে বল থেলে দেন। কিন্তু রেফারি ফ্ল্যাগ তুলে জানিয়ে দেন, অফসাইড ছিলো।
ফলে গোলশূণ্য সমতা নিয়েই প্রথমার্ধ শেষে মাঠ ছাড়ে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে এসে জাল খুঁহে পায় দু’দলই। ৫১ মিনিটে লিভারপুল গোলরক্ষকের হেয়ালিপনার সুযোগ শতভাগ কাজে লাগিয়ে হোয়াইটদের ১-০ তে এগিয়ে দেন করিম বেঞ্জেমা। মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন অলরেডদের হাজার হাজার সমর্থক।
তবে তাদের সেই হতাসাকে উৎসবে রুপ দিতে খুব বেশি সময় নেয়নি লিভারপুল। ৫৫ মিনিটে জেমস মিলনারের কর্ণার কিক থেকে দিহান লোভরেন হেড দিয়ে সাদিও মানের কাছে বল দিলে গোলপোস্টের একেবারে সামনে থেকে তা পা বাড়িয়ে জালে জড়িয়ে ম্যাচে ১-১ সমকা আনেন।
অবশ্য সমতাটি খুব বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি লিভারপুল। ৬৩ মিনিটে মার্সেলোর ক্রস থেকে বাইসাইকেল শটে গোল করে রিয়ালকে ২-১ এ ব্যবধান এনে দেন গ্যারেথ বেল।
রিয়ালের তৃতীয় গোলটিও আসে বেলের পা থেকে। ৮৩ মিনিটে ৩০ মিটার দুরে থেকে তার নেয়া শট গোলরক্ষকের হাত ফসকে গেলে ম্যাচ ৩-১ ব্যবধানে পিছিয়ে ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায় লিভারপুল।
আর লিভারপুল মাঠ ছাড়ে ১৩ তম চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয়ের উল্লাসে মেতে।