খেলার খবর: অধিকাংশ সময় বল পায়ে থাকল, স্কিল মুগ্ধতা ছড়ালো, দেখার মতো মুহুর্মুহু আক্রমণ হলো। তবু কাঙ্ক্ষিত গোল এলো না। গোটা ম্যাচে কী দুর্দান্তই না খেলল ব্রাজিল! অথচ হেরে মাঠ ছাড়তে হলো। কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে ২-১ গোলে হেরে রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘটল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।
ব্রাজিল গোলে শট নিয়েছে ২৬টি, বেলজিয়াম ৮টি। এর মধ্যে ব্রাজিল সরাসরি গোলে শট নিতে পেরেছে ৯টি, বেলজিয়াম ৩টি, যার দুটিতে গোল এসেছে। ব্রাজিল ৮টি কর্নার পেলেও বেলজিয়াম পেয়েছে ৪টি। বল পিজশনিং ব্রাজিল ৫৭%, বেলজিয়াম ৪৩%।
সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কাজান এরিনায় মুখোমুখি হয় ব্রাজিল-বেলজিয়াম। আক্রমণাত্মক সূচনা করে ব্রাজিল। সূচনালগ্নে নান্দনিক ফুটবলের পসরা সাজায় সেলেকাওরা। ফলে সুযোগ আসতেও বিলম্ব হয়নি। তবে ৮ মিনিটে তা কাজে লাগাতে পারেননি থিয়াগা সিলভা।
পরেও আক্রমণের ধারা বজায় রাখে ব্রাজিল। কিন্তু ১৩ মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে এগিয়ে যায় বেলজিয়াম। কর্নার থেকে কেভিন ডি ব্রুইনার ক্রসে ফার্নান্দিনহোর আত্মঘাতী গোলে লিড পায় রবার্তো মার্টিনেজের শিষ্যরা।
পিছিয়ে পড়ে গোল পেতে মরিয়া হয়ে পড়ে ব্রাজিল। প্রতিপক্ষ শিবিরে একের পর এক আক্রমণ হানতে থাকে দলটি। কিন্তু বিধিবাম! তা-ই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়ায় দলটির জন্য। আরেকটি গোল হজম করে এর খেসারত গুনতে হয় তাদের। ৩১ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ফেলাইনির কাছ থেকে বল পান লুকাকু। মাঝমাঠ থেকে তা একাই টেনে চারজনকে কাটিয়ে বল বাড়ান ডি ব্রুইনার দিকে। ডি বক্সের বাইরে থেকে অসামান্য দক্ষতায় দূরপাল্লার বুলেটগতির শটে তা জালে বল জড়ান তিনি। এতে স্কোরলাইন হয় বেলজিয়াম ২-০ ব্রাজিল।
এরপর দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে বেলজিয়াম। ঘন ঘন আক্রমণে ব্রাজিল শিবিরে ত্রাস ছড়ান বেলজিয়ানরা। তবে আর গোলের দেখা পায়নি তারা। মাঝে মাঝে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠেছে নেইমার-মার্সেলোরা। তবে তাদের আক্রমণগুলো ছিল একেবারে অগোছালো। ফলে গোল পায়নি তারাও।
স্বভাবতই গোল পেতে বিরতির পর বেলজিয়ামের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সেলেকাওরা। একের এক আক্রমণে রেড ডেভিলদের ব্যতিব্যস্ত রাখে তারা। এবার তাদের আক্রমণ আলোর মুখও দেখে। ৭৬ মিনিটে দুর্দান্ত হেডে লক্ষ্যভেদ করে ব্যবধান কমান অগাস্টো রেনোতো। এতে লড়াইয়ে ফেরার ইঙ্গিত দেয় ব্রাজিল।
লড়াইয়ের ফেরার সুযোগও পায় তারা। তবে শেষদিকে ডি বক্সে নেইমারের বাড়ানো বল নাগালে পেয়েও তা ঠিকানায় পাঠাতে পারেননি কুতিনহো। এদিন যেন ফুটবল দেবীও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। না হলে একেবারে অন্তিমলগ্নে নেইমারের অনন্যাসাধারণ শটটি বা কেন দেবদূত হয়ে ঠেকিয়ে দেবেন বেলজিয়াম গোলরক্ষক কর্তোয়া? স্বাভাবিকভাবেই হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তিতের শিষ্যদের। এর মধ্য দিয়ে স্বপ্নের হেক্সা (ষষ্ঠ শিরোপা) মিশন ব্যর্থ হলো তাদের।